নবম দশম শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ে আওয়ামী লীগকে দেশের পুরনো ও বৃহত্তর দল হিসেবে উল্লেখ করা হয়

জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা ও গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারের তকমা পাওয়া রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে যেখানে নিষিদ্ধের দাবির উঠেছে, সেখানে পাঠ্যবইয়ে দলটিকে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বলা হয়েছে। এছাড়া বিএনপি সম্পর্কে বলা হয়েছে, দলটির জন্ম হয়েছে সামরিক শাসনামলে।
নতুন শিক্ষাবর্ষে প্রকাশিত নবম-দশম শ্রেণির ‘পৌরনীতি ও নাগরিকতা’ বইয়ের ৭৩ নম্বর পৃষ্ঠার ‘গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন ব্যবস্থা’ অধ্যায়ে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ সম্পর্কে লেখা হয়েছে, আওয়ামী লীগ এ দেশের সবচেয়ে পুরাতন ও বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকায় আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৫ সালে নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও শোষণমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ আওয়ামী লীগের মূলনীতি।
অন্যদিকে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি’র পরিবর্তে ‘সাবেক সেনাপ্রধান’ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সাবেক সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনামলে ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠিত হয়। দলটি ইসলামী মূল্যবোধ, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বিশ্বাসী।
আগের পাঠ্যবইয়ে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে বিতর্কিত ভূমিকা, নিষিদ্ধ হওয়া এবং শীর্ষ নেতাদের যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়টি ছিল। তবে নতুন বইয়ে সেগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে। কেবল একটি বাক্যে তাদের ‘বিতর্কিত ভূমিকা’র উল্লেখ রয়েছে।
পূর্ববর্তী সংস্করণে জাতীয় পার্টিকে দেশের তৃতীয় বৃহৎ দল হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও এবার তা বাদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নামের আগে ‘সামরিক শাসক’ শব্দটি যোগ করা হয়েছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান জানান, পাঠ্যবই সংশোধনের বিষয়ে পরিমার্জন কমিটির সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে, আওয়ামী লীগের ইতিহাসে চব্বিশের ঘটনাবলী অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল একাত্তর পর্যন্ত ইতিহাস সংযুক্ত করার। ভবিষ্যতে চব্বিশের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হবে।