বিভিন্ন মহলের ধিক্কার ও প্রতিবাদ

উপদেষ্টা মাহফুজ এর উপর আঘাতকারীরা বিপ্লবের শত্রু

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, ১৫ মে ২০২৫ | আপডেট: ৫:২৩ পূর্বাহ্ন, ১৫ মে ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনের সময়ে আলোচনা কালে উপদেষ্টা মাহফুজের উপর  বোতলক্ষেপের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ধিক্কার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন মহল।  হামলাকারীদের বিপ্লবের শত্রু হাসিনার ধূসর হিসাবে চিহ্নিত করে দেশবাসী মাহফুজের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। অনলাইন অ্যাক্টিভিট রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিনাকী ভট্টাচার্য মাহফুজকে হাসিনার নিশ্চিদ্র অন্ধকারে এক টুকরো আলু হিসাবে চিহ্নিত করে বলেছেন আমাদের গন অভ্যুত্থানের শেষ পংক্তিটি লেখা হবে মাহফুজের বিজয়ের গালি দিয়ে। এছাড়াও তীব্র নিন্দা অর্ধেক কার জানিয়েছেন দোস্ত আসিফ মাহমুদ শরীফ ও সারজিস আলম।

আসিফ মাহমুদ ফেসবুক পোস্টে লেখেন, আমাদের নিজস্ব দায়িত্ব আছে সরকারে। মন্ত্রণালয়ের দাপ্তরিক দায়িত্ব ছাড়াও অতিরিক্ত অনেক দায়িত্ব নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। তারপরও, ছাত্রদের যেকোনো সমস্যা, আন্দোলনের সমাধান কিংবা যৌক্তিক দাবি আদায়ে সবসময় সচেষ্ট থাকার চেষ্টা করি। অন্য মন্ত্রণালয়ের বিষয়েও মাঝে মাঝে সেতুবন্ধনের ভূমিকা পালন করি এবং সমঝোতার চেষ্টা করি।

আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, কোনো শক্তি বিলম্বিত করতে পারবে না: প্রেস সচিব

আজকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিষয়টিও আমার অফিসিয়াল দায়িত্বের আওতায় পড়ে না। কিন্তু দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে উদ্যোগ নিয়েছি।

কয়েক ঘণ্টা আগে মাহফুজ ভাইয়ের সঙ্গে যা ঘটল, তাতে  হতাশ হয়েছি। ভাই তো চাইলেই পারতেন, ‘এটা আমার মন্ত্রণালয়ের বিষয় নয়’ বলে এড়িয়ে যেতে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ মুজিবের অবস্থান নিয়ে বিতর্ক যে কারণে

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের মাথায় বোতল নিক্ষেপের ঘটনায় জড়িতদের ধিক্কার জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

সারজিস আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, মাহফুজ আলম শিক্ষা উপদেষ্টা নয় কিংবা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিগুলোর সাথে সম্পৃক্ত কোন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কিত নয়। 

তারপরও তিনি সেখানে গিয়েছিলেন অভ্যুত্থানের ছাত্র জনতার একজন প্রতিনিধি হিসেবে। আপনাদের প্রতিনিধি হিসেবে। তিনি নিজের অফিস কিংবা প্রশাসনিক জায়গায় আপনাদেরকে না ডেকে বের হয়ে রাজপথে আপনাদের কাছে গিয়েছেন। এরপর তার সাথে যে আচরণ হয়েছে সেটার জন্য আপনাদের প্রতি ধিক্কার।

আপনাদেরকে পূর্বে কমিটমেন্ট দেয়ার পরও কেন কাজগুলো বাস্তবায়ন হলো না সেটার জন্য আপনাদের তো শিক্ষা সচিবকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত। শিক্ষা উপদেষ্টা কে জবাবদিহি করানো উচিত। সেটা না করে যে আপনাদের কথা শুনতে গিয়েছে আপনারা তাকে আঘাত করেছেন!

গতকাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একজন প্রতিনিধি আমার সাথে যোগাযোগ করে। আমি সাথে সাথে মাহফুজ ভাইকে জানাই। তিনি আজকে রাতে নয়টায় আপনাদেরকে মিটিং এর সময় দেন এবং এটাও বলেন যে আগামীকালকে শিক্ষা উপদেষ্টার সাথে মিটিং এর ব্যবস্থা করে দিবেন। তারপর তিনি এটাও বলেছেন- এই দুই জায়গায় সমস্যাগুলোর কাঙ্খিত সমাধান না পেলে তিনি প্রধান উপদেষ্টার সাথে কথা বলার ব্যবস্থা করে দিবেন। তারপরও আপনারা আপনাদের মত করে কর্মসূচি করেছেন। 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কতিপয় সুশীল উপদেষ্টার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা তারা জনগণকে ডিল করতে ভয় পায়। তখন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় না হলেও ছাত্র উপদেষ্টাদদেরকে পাবলিক ডিলিংস করতে সামনে ঠেলে দেওয়া হয়। 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এর আগেও একবার মুভমেন্ট করেছে। দাবিগুলো যৌক্তিক। তারপরও কেন আজকে তাদের এই মুভমেন্ট করতে হলো এর জবাবদিহি এই সরকার এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরকে করতে হবে। চাপে পড়লে কাজ করে নাহয় অফিস করে এমন দুর্বল ব্যক্তিত্বের মানুষ অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারে আমরা প্রত্যাশা করিনা।

১৫ মে (বৃহস্পতিবার) সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন পিনাকী ভট্টাচার্য। তার পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

সকল দুর্বলতা থাকার পরেও আমরা মাহফুজকে ভালোবাসতাম! হ্যাঁ, ভালোবেসেছিলাম এই জন্য যে, সে ছিলো হাসিনার নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে এক টুকরো আলো।

সে আলো নিভে গেলে, আমরা আবার কীভাবে আরেক নতুন আগুন জ্বলাবো? 

মাহফুজের ওপর আঘাত করে আপনি কি হাসিনার প্রতিভূ হবেন? আপনি কি নিঝুমের মতো নিঃশ্বাস থামানো সেই অন্ধকার, নাকি পিয়ালের মতো লুকোনো খুনি? আপনি কি সেই ছায়া, যে ছাত্রলীগ আর খাকি পোশাকে গুলি চালিয়ে শহিদদের নিঃশ্বাস থামিয়ে দিয়েছিলো?

বিপ্লব একটি অসমাপ্ত কবিতার মতো, যার শেষ পংক্তি লিখতে হয় জয়ের কালি দিয়ে। মাহফুজকে আমাদের দরকার বিপ্লবের সেই শেষ পংক্তি লেখার জন্য। মাহফুজকে যারা আঘাত করেছে তারা বিপ্লবের শত্রু, তারা হাসিনার দুঃশাসনের বিপরীতে যারা ভিন্ন ভোরের ইঙ্গিত হয়ে উঠতে চায় তাদের সকলের শত্রু।

আসুন, আমরা মাহফুজের পাশে দৃঢ়ভাবে দাড়াই।