যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা, নিহত ৯ ফিলিস্তিনি

গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর থাকা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সারাদিনজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনী নানা স্থানে হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় অন্তত ৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ডজনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র ও চিকিৎসকরা।
সাক্ষী ও চিকিৎসা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা গাজার উত্তর, কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলা, গোলাবর্ষণ, ছোট অস্ত্রের গুলি ও ধোঁয়া বোমা হামলা চালায়।
আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করলে ফল হবে ভয়াবহ: ইরানের হুঁশিয়ারি
গাজার কেন্দ্রীয় এলাকায় এক ইসরায়েলি বিমান হামলায় একটি বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। এতে দুই নারীসহ তিনজন নিহত হন এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। অনেকেই এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন।
এছাড়া জেইতুন, সাবরা ও আল-নাফাক এলাকায়ও বোমাবর্ষণ হয়, যদিও সেখানে হতাহতের খবর মেলেনি।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে এখনো ১১,৪৬০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি
গাজার পশ্চিমাঞ্চলে ইয়ারমুক স্কুলে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুতদের ওপর ড্রোন হামলা চালানো হয়, এতে কয়েকজন আহত হন।
এছাড়া শহরের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল আল-জেইতুনে গোলাবর্ষণে আরও চারজন আহত হন।
বৃহস্পতিবার রাতের দিকে সাবরা এলাকায় একটি বাড়িতে ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে একটি পরিবারের চার সদস্য নিহত হন এবং প্রায় ৪০ জন ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েন, জানিয়েছে প্যালেস্টিনি সিভিল ডিফেন্স ও চিকিৎসা সূত্র।
কেন্দ্রীয় গাজায় নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের উত্তর-পশ্চিমে আল-রাশিদ সড়কে যাত্রীদের ওপর ইসরায়েলি গুলিতে বেশ কয়েকজন আহত হন।
দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসের আল-বিইয়ুক এলাকায় বেসামরিক জনসমাবেশে হামলায় এক ব্যক্তি নিহত হন, এবং হ্যামদ এলাকায় এক নারী নিহত ও আরও কয়েকজন আহত হন।
এছাড়া বানি সুফাইলা রাউন্ডআবাউটের কাছেও হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে।
এই হামলাগুলো এমন সময়ে ঘটছে যখন বৃহস্পতিবার ভোরে মিশরের শার্ম আল-শেইখে তুরস্ক, মিশর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণা করা হয়।
চুক্তিটি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা গাজা পরিকল্পনার প্রথম ধাপের অংশ, যাতে বন্দি বিনিময়, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি বাহিনীর ধীরে ধীরে গাজা থেকে প্রত্যাহারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
পরবর্তী ধাপে হামাসবিহীন নতুন প্রশাসন, আরব ও ইসলামি দেশগুলোর যৌথ নিরাপত্তা বাহিনী এবং গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজার ২০০-এরও বেশি প্যালেস্টিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু, এবং গাজা অঞ্চল প্রায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।