কয়েকটি দলের মন যুগিয়ে চলার নীতি সরকারকে বাদ দিতে হবে: তিন দলের যৌথ সভায় বক্তারা
বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, এবি পার্টি ও আপ বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, কয়েকটি রাজনৈতিক দলের মন যুগিয়ে চলার নীতি সরকারকে বাদ দিতে হবে। তারা বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা উপেক্ষা করে কিছু দলের চাপের কাছে নতি স্বীকার করায় বর্তমান সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
রবিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত “স্বল্প আস্থার সমাজে সংস্কার ও নির্বাচনী ঐক্যের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ” শীর্ষক এই সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি এডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম। প্রধান আলোচক ছিলেন লন্ডনের সেয়াস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও রাষ্ট্র চিন্তক ড. মুশতাক হোসেন খান।
আরও পড়ুন: চার মন্ত্রণালয় ও বিভাগে নতুন সচিব নিয়োগ
সভায় আরও বক্তব্য দেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হাসিব উদ্দিন হোসেন, এবি পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মো. হিজবুল্লাহ প্রমুখ।
প্রধান আলোচক ড. মুশতাক হোসেন বলেন, “আস্থার সংকটই এখন রাষ্ট্রের বড় সমস্যা। অপরাধ করলে শাস্তি না হওয়া, রাজনৈতিক ভণ্ডামি ও পারস্পরিক অবিশ্বাস সমাজকে ভেতর থেকে দুর্বল করছে।” তিনি বলেন, “স্বার্থবাদী দলগুলো ভাইভাই রাজনীতি করে বলেই বারবার স্বৈরাচার ফিরে আসে।”
আরও পড়ুন: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ, ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৭৬ লাখ
সভাপতি এডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম বলেন, “সব রাজনৈতিক দলেই ভালো-মন্দ আছে, কিন্তু এখনই রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ শুরু করতে হবে। সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যেই ফ্যাসিবাদ লুকিয়ে আছে।”
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “সরকার যদি মাত্র দুই-একটা দলের মন যুগিয়ে চলে, তবে তারা জনগণের কাছে ভিলেন হয়ে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “অধ্যাপক ইউনুসের সরকার জনগণের চাওয়া নয়, রাজনৈতিক চাপের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে—এটা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়।”
আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, “রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়েছে। এই অবস্থায় জনগণকে অন্ধকারে রেখে ক্ষমতার কাড়াকাড়ি চললে জনগণ আবার হতাশ হবে।”
শহিদ উদ্দিন স্বপন বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের পর সমাজ বিপ্লবের সুযোগ তৈরি হয়েছিল, কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর পুরনো মানসিকতা সেই সম্ভাবনাকে ক্ষুণ্ণ করেছে।”
অধ্যাপক আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের কাছে নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। অহংকারে চললে কেউ টিকবে না।”
আর আরেফিন মো. হিজবুল্লাহ বলেন, “ফ্যাসিবাদ নির্মূলে শেখ মুজিবের ছবি টানানো বন্ধ করতে হবে। ফ্যাসিবাদের শেকড় যেখানে, সেখানে সংস্কার চালাতে হবে।”
সভায় তিন দলই রাজনৈতিক ঐক্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।





