নির্বাচন সামনে রেখে সাইবার নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার রিপোর্ট
প্রকাশিত: ৪:৪৯ অপরাহ্ন, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২:১৬ অপরাহ্ন, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে সব ধরনের সাইবার হুমকি মোকাবিলায় সাইবার নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন। সভায় তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাদের তথ্যপ্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়াতে হবে এবং সব ধরনের সাইবার অপরাধকে কঠোরভাবে মোকাবিলা করতে হবে।”

আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার কবরের জায়গা পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকার নাগরিক সেবাসমূহ ধাপে ধাপে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসছে। ইতোমধ্যে দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন নাগরিক সেবা অনলাইনে প্রদান করা হচ্ছে। এসব সেবা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন রাখতে সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি।

তিনি নাগরিক সেবার গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে সাইবার সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়মিত সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার হালনাগাদ করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট জনবলকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

আরও পড়ুন: হাসিনার শোকবার্তা ভণ্ডামির বহিঃপ্রকাশ কি না, সন্দেহ বার্গম্যানের

সভায় প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সংশ্লিষ্ট জনবলকে একটি রেটিং পদ্ধতির আওতায় আনতে হবে, যাতে প্রতিষ্ঠানের সাইবার সুরক্ষার প্রকৃত মূল্যায়ন সহজ হয়।

ফিনান্সিয়াল সেক্টরে সংঘটিত সাইবার অপরাধের বিষয়ে কঠোর অবস্থানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনো অপরাধী যেন পার পেয়ে না যায়—এ লক্ষ্যে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিকে বিচার বিভাগের পাশাপাশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।

বৈঠকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, ইতোমধ্যে ৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে ক্রিটিক্যাল ইনফরমেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তিনি আরও কিছু প্রতিষ্ঠান এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন।

এছাড়া আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গুজব, মিসইনফরমেশন ও ডিসইনফরমেশনসহ বিভিন্ন সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি ও বিটিআরসি’র মধ্যে সমন্বয় জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ. মনসুর বলেন, ব্যাংকিং খাতের সাইবার নিরাপত্তা আরও সুদৃঢ় করতে ইতোমধ্যে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং আরও কিছু কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি সেক্টরাল সার্ট (CERT) গঠনের উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন।

জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের সদস্য সচিব ও জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সির মহাপরিচালক ড. মো. তৈয়বুর রহমান পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে এজেন্সির চলমান কার্যক্রম, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা এবং “Cyber Incident Reporting and Response System”-এর বিস্তারিত তুলে ধরেন।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

উল্লেখ্য, ২১ মে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রণয়নের পর গত ২৬ আগস্ট এই অধ্যাদেশের অধীনে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিল গঠন করা হয়। ২৫ সদস্যবিশিষ্ট এই কাউন্সিলের নেতৃত্বে রয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।