হাটে নয়,ক্রেতার ভিড় খামারে

ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি কাঙ্ক্ষিত দামে মিলছে না পশু

Abid Rayhan Jaki
আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৫:৫৬ অপরাহ্ন, ০৭ জুন ২০২৪ | আপডেট: ৬:৪৯ পূর্বাহ্ন, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

গরম সেই সাথে কোরবানির পশুর হাটে অনেক ভিড়। সঙ্গে রয়েছে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য। এসব ঝামেলা এড়িয়ে কিশোরগঞ্জে কোরবানির পশু কিনতে সরাসরি খামারে গৃহস্থের বাড়িতে ভিড় করছেন ক্রেতারা।

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে জেলার ১৩টি উপজেলায় এ বছর কোরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে ১ লক্ষ ৭১ হাজার ৯৩৩ টি পশুর।জেলায় এ বছর কোরবানির জন্য প্রায় ১ লাখ ৯৯ হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন: সাতক্ষীরা তালায় ঘেরের আইলে সবজি চাষ, কৃষিতে সম্ভাবনার হাতছানি

এর মধ্যে ৬৫১০৫ টি ষাড়,৩১৭০ টি বলদ, ১৬ হাজার ৬০১ টি গাভী, ১ হাজার ৪২৯ টি মহিষ,১ লক্ষ ৮৪ হাজার ১৬৮ টি ছাগল,৪ হাজার ৯২৩ টি ভেড়া কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।প্রাকৃতিকভাবে প্রস্তুত করা এসব পশু কিনতে খামারে প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন খুচরা ক্রেতাসহ পাইকারেরাও।

পশু ক্রেতারা বলছেন, হাটের ভিড় এড়িয়ে সুস্থ ও সবল পশু দেখেশুনে কিনতে তাঁরা সরাসরি খামারে এসেছেন।

আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় ধানের শীষের কান্ডারী হিসেবে আলোচনার শীর্ষে এইচ. এম. রহমত উল্লাহ পলাশ

খামারিরা বলছেন, গবাদিপশুর খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যয় বেশি হয়েছে। সে তুলনায় ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তাঁরা।

বাংলাদেশ ডেইরী ফার্মারস এসোসিয়েশন কিশোরগঞ্জ জেলার শাখার সভাপতি আজমল খান বলেন, চলতি বছর দেশীয় গরু দ্বারাই কোরবানি চাহিদা পূরণ হবে এবং ২৭ হাজার ৭৬৩ টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।

করিমগঞ্জ উপজেলার আয়লা গ্রামের ইয়াসিন এগ্রো ফার্মের মালিক মোশাররফ হোসেন সুমন জানান, এ বছর তার ফার্মে ১০-১৫ টি গরু রয়েছে যা কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।গরু গুলি তিনি দেশীয় পদ্ধতিতে লালন পালন করেছেন। ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তিনি। এলাকার স্থানীয় যুবকেরা তার ফার্ম দেখে উৎসাহিত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

খামারিরা বলছেন,বেশির ভাগ খামারি নিজেদের গচ্ছিত পুঁজি দিয়ে খামারে কোরবানির জন্য পশু পালন করেছেন। আবার অনেক খামারি এনজিও বা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েও পশু পালন করেছেন। পশুখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় পশু লালনপালনে ব্যয় ও বেড়ে গেছে। এখন সে অনুযায়ী দাম না পেলে খামারিদের পথে বসতে হবে।

সদর উপজেলার খামারি বিপুল মিয়া জানান, তাঁর খামারে ২২টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে ১২টি এবার কোরবানির হাটে তুলবেন।ভাল দাম পাবেন বলে আশা করছেন তিনি।

খামারে গরু কিনতে আসা আবুল হোসেন নামের এক ক্রেতা বলেন, “পশুর হাটগুলোতে এক লাখ টাকায় পাঁচ হাজার টাকা হাসিল দিতে হয় ক্রেতাকে। খামার থেকে গরু কিনলে সেই টাকা দিতে হচ্ছে না। তা ছাড়া সুস্থ ও সবল নিশ্চিত হয়েই গরু কিনছেন তারা।

জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃসুভাষ চন্দ্র পন্ডিত জানান, কিশোরগঞ্জ জেলায় এ বছর ২৩ হাজার খামারির মাধ্যমে ১ লক্ষ ৭১ হাজার ৯৩৩ টি পশু কোরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে। সর্বমোট পশু প্রস্তুত আছে ১ লক্ষ ৯৯ হাজার ৬৯৬ টি।

এর মধ্যে ৬৫১০৫ টি ষাড়,৩১৭০ টি বলদ, ১৬ হাজার ৬০১ টি গাভী, ১ হাজার ৪২৯ টি মহিষ,১ লক্ষ ৮৪ হাজার ১৬৮ টি ছাগল,৪ হাজার ৯২৩ টি ভেড়া কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। রুগ্ন পশু যাতে বিক্রি করতে না পারে তার জন্য কোরবানির হাটে ৪৭টি ভেটেনারি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। চামড়া ছাড়ানো ও সংরক্ষণের জন্য ২৫০ জন কসাই ও ২৭০ জন মৌসুমী কসাইদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।