নরসিংদীতে খেয়া পারাপারের ভাড়া আদায়কে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের টেঁটাযুদ্ধ, আহত ৮
নরসিংদী সদর উপজেলার মেঘনা নদীতে খেয়া পারাপারের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের আটজন টেঁটাবিদ্ধ হয়ে নরসিংদী সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার মাধবদী থানাধীন দুর্গম চরাঞ্চল চরদিঘলদী ইউনিয়নের জিতরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন রামগঞ্জ উপজেলা
টেঁটাবিদ্ধরা হলেন চরদিঘলদী ইউনিয়নের জিতরামপুর গ্রামের মৃত লেদু মেম্বারের ছেলে আকতার (৬০), তার ছেলে আমিনুল (৩৫) এবং আকতারের ছোট ভাই জামাল (৫৫)। এরা সবাই শহিদ মেম্বারের সমর্থক বলে জানা যায়।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় ৩ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুর-৪: কাপাসিয়ায় বিএনপির প্রার্থী ঘোষণায় আনন্দের বন্যা ,শুকরিয়া আদায়
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মেঘনা নদীপথের করিমপুর (শ্রীনগর)-জিতরামপুর খেয়া পারাপারের ভাড়া ১০ টাকা আদায় করা হতো। গত কয়েক মাস ধরে হঠাৎ ১০ টাকার স্থলে অতিরিক্ত ২০ টাকা ভাড়া আদায় করা হয়। এ নিয়ে প্রতিনিয়ত যাত্রীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়। গত সোমবার ভাড়া আদায়কে কেন্দ্র করে শহিদ মেম্বার ও চাঁন মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে তুমুল বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। দু’পক্ষের সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হলে খেয়া ঘাট বন্ধ হয়ে যায়।
মঙ্গলবার সকালে ফের টেঁটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষের লোকজন। এতে তিনজন টেঁটাবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের আটজন আহত হয়। আহতদের মধ্যে তিনজন নরসিংদী সদর হাসপাতালে এবং বাকিরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহত জামাল মিয়ার স্বজনরা জানান, খেয়া পারাপারের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে প্রতিবাদ করায় চাঁন মিয়া ও তার ভাইয়েরা মিলে স্থানীয় ওহাব মিয়া (৭০) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। দীর্ঘ এক মাস ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে আসেন। আজ মঙ্গলবার এ নিয়ে আবার চাঁন মিয়া ও তার সহযোগীরা শহিদ মেম্বারের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি বলেন, জেলা পরিষদ কর্তৃক খেয়া পারাপারের ইজারার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও তারা গত কয়েক মাস ধরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা না হওয়ার কারণে তারা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। সংঘর্ষের আগে পুলিশের এক বড় কর্মকর্তা এসে তাদের বুঝিয়ে যান। পুলিশ কর্মকর্তা চলে যাওয়ার পর তারা আরও বেপরোয়া হয়। তিনি আরও বলেন, “কামারের দোকানে কোরআন শরীফ পড়ে লাভ নেই।”
মাধবদী থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। সকালে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হলেও এখন পরিবেশ শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত তিনজন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি।





