ফ্লোটিলার ত্রাণবাহী নতুন নৌবহর গাজার উপকূল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে

যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দিতে সমুদ্রপথে এগিয়ে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর জোট ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)–এর নতুন নৌবহর। বর্তমানে বহরটি ভূমধ্যসাগরে গাজার উপকূল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে এফএফসি জানায়, আমাদের ফ্লোটিলার নৌবহরটি বর্তমানে গাজার উপকূল থেকে ১৫০ নটিক্যাল মাইল বা প্রায় ২৭৭ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। কিছু দিন আগে আমাদের ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ মিশনের নৌযানগুলোকে যে স্থানে ইসরায়েলি নৌবাহিনী আটক করেছিল, নতুন বহরটি তার কাছাকাছি অবস্থান করছে।
আরও পড়ুন: অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন যে তিন জন
এফএফসি জোটের সদস্য সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কমিটি ফর ব্রেকিং দ্য সিজ অন গাজা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্টে বলেছে, আমরা গাজার পথে এগিয়ে যাচ্ছি।
নতুন এই বহরটিতে খাদ্য, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবাহী ৯টি নৌযান** রয়েছে। এতে অংশ নিয়েছেন ক্রুসহ ১০০-এরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী।
আরও পড়ুন: গাজায় আটক আরও ১৩ জিম্মিকে রেডক্রসের হাতে তুলে দিল হামাস
এর আগে গত আগস্টে গাজায় ত্রাণ পাঠাতে ৪৩টি নৌযান নিয়ে ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ মিশন শুরু করেছিল এফএফসি জোট। সেই মিশনে অংশ নিয়েছিলেন ৪৪টি দেশের প্রায় ৫০০ নাগরিক—যাদের মধ্যে ছিলেন পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলা, আইনজীবী, পার্লামেন্ট সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবীরা।
৩১ আগস্ট স্পেনের বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেছিল গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। তবে গাজার উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছানোর পর ইসরায়েলি নৌবাহিনী একে একে সব নৌযান আটক করে। নৌযান, ক্রু এবং অভিযাত্রীদের ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েকজনকে এখনও আটক রাখা হয়েছে, বাকিদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে গ্রেটা থুনবার্গসহ শতাধিক অভিযাত্রীকে গ্রিসে ফেরত পাঠানো হয়।
ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র সমালোচনা ছড়িয়ে পড়ে। মানবাধিকার সংস্থা ও বিভিন্ন সরকার ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ বছর ধরে গাজার সমুদ্র উপকূল অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। গাজায় কোনো কার্যকর সমুদ্রবন্দর নেই এবং ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞার কারণে আন্তর্জাতিক কোনো নৌযান উপকূলের কাছাকাছি যেতে পারে না। যদি ফ্রিডম ফ্লোটিলার নতুন নৌবহর গাজার উপকূলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়, তবে সেটিই হবে ১৮ বছরের মধ্যে প্রথম আন্তর্জাতিক নৌবহরের নোঙর ফেলা। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি