ড. ইউনূসের জাতিসংঘ সফর: প্রেস সচিব জানালেন ৬ সাফল্যের কথা

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, ০৪ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, ০৪ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে অংশগ্রহণ শেষে দেশে ফিরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই সফরে তিনি বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিসহ বিভিন্ন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।

প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেন, বৈশ্বিক নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন এবং গণতন্ত্র, মানবিক নেতৃত্ব ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক ভিশন তুলে ধরেন। সফর শেষে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে ড. ইউনূসের সফরের ছয়টি উল্লেখযোগ্য সাফল্যের কথা তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন: ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান দিচ্ছে বাংলাদেশ, আশ্রয় দিচ্ছে ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে

১. গণতান্ত্রিক প্রতিশ্রুতির বার্তা

সাধারণ পরিষদের ভাষণে ড. ইউনূস গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থার প্রতি সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি আসন্ন নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার প্রতিশ্রুতি দেন। একইসঙ্গে, ছয়টি রাজনৈতিক দলের নেতাদের একসঙ্গে এ সফরে অংশগ্রহণ বিশ্বকে বার্তা দিয়েছে যে বাংলাদেশ ঐক্যবদ্ধভাবে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথে এগোচ্ছে।

আরও পড়ুন: সেনানিবাসের বাড়ি সাবজেল ঘোষণা প্রসঙ্গে ঢিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম

২. বৈশ্বিক নেতাদের সঙ্গে কৌশলগত সংলাপ

সফরে ড. ইউনূস ইতালি, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো ও ভুটানের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এছাড়া জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা, আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা, ইউনিসেফ নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল ও নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমাসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক নেতার সঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত এক নৈশভোজেও যোগ দেন।

৩. রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক নেতৃত্ব

রোহিঙ্গা সংকটকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে জোরালোভাবে উপস্থাপন করেন ড. ইউনূস। তিনি মিয়ানমারে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের দাবি জানান এবং যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে ৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নতুন সহায়তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হন।

৪. এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতিতে মূল্যায়ন

ড. ইউনূস জাতিসংঘকে বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি বিষয়ে স্বাধীন মূল্যায়ন করার আহ্বান জানান। এটি বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় স্বচ্ছতা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক বলে উল্লেখ করেন তিনি।

৫. নতুন কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা

সফরে কসোভো, আলবেনিয়া ও ইউরোপের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশি শ্রমশক্তির নতুন চাহিদা নিয়ে আলোচনা হয়। এতে ভবিষ্যতে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

৬. সহযোগিতামূলক ভবিষ্যতের ভিশন

জাতিসংঘে ড. ইউনূসের অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে নতুনভাবে তুলে ধরে। তিনি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শাসন, মানবিক সংহতি ও গঠনমূলক আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতি অঙ্গীকারের বার্তা দেন।