গাজীপুরে অনুমোদনহীন মেলা: প্রতারণা, জুয়া ও প্রশাসনের নীরবতা !

গাজীপুরে সম্প্রতি নানা এলাকায় নামে বেনামে মেলা আয়োজনের নামে চলছে বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও মানুষ ঠকানোর নানা অভিযোগ উঠেছে। অনুমোদনহীন এসব মেলায় চলছে অবৈধ জুয়া, রাফেল ড্র, ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের নামে প্রতারণা। একটা কিনলে দশটা ফ্রি লোভনীয় অফার, লোভে পড়ে সাধারণ মানুষ হারাচ্ছেন দীর্ঘ একটি মাস গার্মেন্টস সহ বিভিন্ন কলকারখানায় চাকরি করে উপার্জিত অর্থ।
বিভিন্ন সড়ক দখল করে অটোরিকশা থেকে অর্থ আদায় করছে, এছাড়াও গাড়ি পার্কিং করে আরো অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতেছে যেমন বাইক প্রতি ৫০ পঞ্চাশ টাকা, অটোতে যাত্রী উঠাতে হলে তাদেরকে দিতে হয় ২০ টাকা, অনেক রাত পর্যন্ত মেলা চালায় আয়োজক কমিটি, মেলা থেকে ফেরার পথে বিভিন্ন সমস্যা পড়তে হচ্ছে, কেউ আবার ছিনতাইকারীর কবলে পরে সর্বোচ্চটা হারাচ্ছেন। উঠতি বয়সী যুবক যুবতীরা মেলায় ঘুরে সময় কাটাচ্ছেন ফলে ক্ষতি হচ্ছে লেখাপড়ার।গাজীপুরে এসব মেলার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গাজীপুরের শিমুলতলীতে গাজীপুর কুটির শিল্প মেলা, পুবাইল থানার আওতাধীন পুবাইল বাজার এলাকায় একটি স্কুল মাঠে শ্রী শ্রী লক্ষ্মী দশমী উদযাপন নামে আরো একটি মেলা, টঙ্গী পূর্ব থানার আওতাধীন রেল স্টেশনের জায়গা দখল করে নামবিহীন আরো একটি মেলা। এভাবেই গাজীপুরে মেলার নাম ব্যবহার করে অসাধু ব্যবসায়ীরা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। শিমুলতলী মেলার বিষয়ে সদর থানার ওসি বলেন মেলার মধ্য লটারি টিকিট বিক্রি করার কোন বৈধতা নেই, বিষয়টি আমি জেনেছি আমি কিলো ডিউটিকে নির্দেশ দিয়েছি তারা সেখানে গিয়ে কয়েকজনকে সরজমিনে লটারি টিকিট বিক্রি করতে দেখেছেন পুলিশ তাদেরকে ধরার চেষ্টা করলেও ধরতে পারিনি, তবে এ জাতীয় কোন খবর আবার আমরা পেলে দ্রুত এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব, পুবাইল বাজারের মেলা বিষয়ে পুবাইল থানার ওসি আমিরুল বলেন আমরা রাস্তায় গাড়ি আটকে টাকা নেওয়ার কথা শুনেছি আমি আমিও সেখানে ছিলাম এরকম কোন কিছু আমার চোখে পড়েনি, তবে সরজমিনে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র, টঙ্গী পূর্ব থানাধীন আমতলী এলাকায় চলছে আরও একটি নাম বিহীন মেলা তবে সে বিষয়টি টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জকে অবগত করলে তিনি বলেন এ বিষয়ে আমার কিছুই করার নেই, তাহলে কি গাজীপুর অভিভাবকহীন, জেলার সাধারণ মানুষকে কে বাঁচাবে এই রকম প্রতারণার হাত থেকে, যে তিনটি মেলা চলছে তিনটি মেলাই গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের আওতায় থাকলেও তিনি কেন নিরব, পুলিশ কমিশনারের পাশাপাশি গাজীপুর জেলা প্রশাসকের এ বিষয়টি দেখার কথা কিন্তু তারাও কেন নীরব এমন প্রশ্ন উঠেছে জনমনে।
আরও পড়ুন: ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবন সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা
গাজীপুরের চিত্র এবং মেলা আয়োজক কমিটির আচরণ দেখে মনে হয় তারাই গাজীপুরের পুলিশ প্রশাসন, জেলা প্রশাসন সহ অন্যান্য সব সরকারি সংস্থাগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছে, মেলা যদি প্রশাসন থেকে অনুমতি দেওয়া হত তাহলে সেগুলো প্রকাশ্যে দেখাতে দোষের কি? আর যদি অনুমোদনহীন হয় তাহলে সেই মেলা কিভাবে চালাতে পারে, কে বন্ধ করবে এসব অবৈধভাবে চলা মেলাগুলো, সেনাবাহিনী নাকি পুলিশ প্রশাসন নাকি জেলা প্রশাসন তা নিয়ে রয়েছে দ্বিধা দ্বন্দ্ব।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মেলা পরিচালনাকারীরা সরকারি অনুমতি ছাড়াই খোলা মাঠ ও বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে এসব মেলা বসাচ্ছে। শিশু ও নারীসহ সাধারণ মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছে প্রতিদিন।
আরও পড়ুন: বিচারকদেরও জবাবদিহিতা থাকা উচিত: ট্রাইব্যুনালের অভিমত
এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা। তারা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে এসব অবৈধ মেলা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।