গুলিবিদ্ধ এনসিপি নেতার নারীসঙ্গীর আটক বাসা থেকে অবৈধ যা যা উদ্ধার হল

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৮:১১ পূর্বাহ্ন, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৮:১১ পূর্বাহ্ন, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) খুলনা বিভাগীয় প্রধান মোতালেব শিকদারের মাথায় গুলির ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)। একই সঙ্গে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, গুলিবিদ্ধ মোতালেব বর্তমানে শঙ্কামুক্ত।

সোমবার (তারিখ) বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে এই গুলির ঘটনা ঘটে। শুরুতে ঘটনাটি সোনাডাঙ্গার গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ঘটেছে বলে দাবি করা হলেও পরে তদন্তে ভিন্ন তথ্য উঠে আসে।

আরও পড়ুন: ৭ ঘণ্টায় ১২ লাখ টাকার বেশি অনুদান পেলেন ডা. তাসনিম জারা

কেএমপির মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হন সোনাডাঙ্গা এলাকার আল আকসা মসজিদ রোডের ‘মুক্তা হাউজ ১০৯’ নামের একটি ভবনের নিচতলায়। এটি এনসিপি নেতা মোতালেবের নারীসঙ্গী তন্বীর ভাড়া বাসা বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি গত দুই মাস ধরে সেখানে অবস্থান করছিলেন।

পুলিশ জানায়, প্রাথমিকভাবে রাস্তায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হওয়ার যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছিল, সেটি সঠিক নয়। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ ও আলামত বিশ্লেষণে ওই তথ্যের সত্যতা মেলেনি।

আরও পড়ুন: প্রত্যাবর্তন ঘিরে উৎসবমুখর প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা বলয়

তল্লাশিকালে পুলিশ ওই বাসা থেকে পাঁচটি বিদেশি মদের খালি বোতল, একটি পিস্তলের খোসা, ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম এবং অনৈতিক কার্যকলাপের আলামত উদ্ধার করেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঘটনার আগের রাতে আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে দুই ব্যক্তি মোতালেব শিকদারের ওই ভাড়া বাসায় প্রবেশ করেন। তাদের পরিচয় ও ভূমিকা তদন্তের আওতায় রয়েছে।

পুলিশের অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, এনসিপি নেতা মোতালেব শিকদার খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবুর অনুসারী সৌরভ ও তার সহযোগীদের সঙ্গে চাঁদাবাজি সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। চাঁদার অর্থ ভাগাভাগি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধ থেকেই গুলির ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

কেএমপির উপ কমিশনার (দক্ষিণ) তাজুল ইসলাম বলেন, “এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মাদকসংশ্লিষ্ট আলামত উদ্ধার হয়েছে এবং প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।”

এদিকে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গুলিবিদ্ধ মোতালেব শিকদার বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন। তার সিটি স্ক্যান রিপোর্ট স্বাভাবিক এসেছে এবং তিনি আশঙ্কামুক্ত রয়েছেন।

অন্যদিকে, ভবনটির মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নাহার জানান, তন্বী নামের ওই তরুণী স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে প্রায় এক মাস আগে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন। তিনি নিজেকে এনজিওকর্মী হিসেবে পরিচয় দিলেও নিয়মিত বাসায় থাকতেন না এবং সেখানে একাধিক পুরুষের যাতায়াত ছিল। বিষয়টি জানার পর বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। এর আগেই এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।