উদ্ধার হওয়া গাঁজা বিক্রির অভিযোগে দুই পুলিশ বদলি

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:২৫ অপরাহ্ন, ১৬ মার্চ ২০২৫ | আপডেট: ২:২৪ অপরাহ্ন, ১৫ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক উদ্ধারকৃত ৯৬ কেজি গাঁজা মালখানায় জমা না দিয়ে ১৫ লাখ টাকায় বিক্রির অভিযোগে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।

শনিবার (১৫ মার্চ) পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেনের সই করা প্রজ্ঞাপেনে তাদেরকে ঢাকা রেঞ্জ অফিসে সংযুক্তির কথা জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: মাধবপুরে চাঁদাবাজির অভিযোগে ছাত্রদল নেতা গ্রেফতা, ৯০ হাজার টাকা উদ্ধার

এই ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পুলিম সদস্য হলেন, নরসিংদী কোর্ট পরিদর্শক খন্দকার জাকির হোসেন, নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পরিদর্শক (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান। নরসিংদী পুলিশ সুপার আরেক আদেশে পরিদর্শক মো. আবুল কায়েস আকন্দকে নরসিংদী গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক এবং মো. সাইরুল ইসলামকে সদর কোর্টের পরিদর্শক হিসেবে বদলির আদেশ দেন।

জানা যায়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলার সৃষ্টিঘর আটাশিয়া এলাকায় মনির হোসেনের লটকন বাগান থেকে ৯৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেন তৎকালীন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল গাফফার। তিনি গাঁজা উদ্ধার করে নরসিংদী ডিবি অফিসে নিয়ে আসেন এবং ওসি কামরুজ্জামানকে বিষয়টি জানান। জব্দ তালিকায় ৯৬ কেজি গাঁজার বাজার মূল্য দেখান ১৯ লাখ ২০ হাজার টাকা। আইন অনুসারে উদ্ধার হওয়া মালামাল আদালতে তুলে ধরা হয়। আদালতের বিচারক উদ্ধার হওয়া গাঁজা (মাদক) ধ্বংস করে ফেলার নির্দেশ দেন। কিন্তু ওসি কামরুজ্জামান, ওসি খন্দকার জাকির হোসেনকে ম্যানেজ করে ওই গাঁজা মাধবদী আলগী এলাকার মাদক ব্যবসায়ী মায়া প্রধানের কাছে বেচে দেন। 

আরও পড়ুন: সাভারে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে উদ্যোগ নিলেন ইউএনও

এদিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও চিফ জুডিশিয়াল আদালতের নথি থেকে জানা যায়, এবছরের ৫ ফেব্রুয়ারি জেলার শিবপুর উপজেলার সৃষ্টিগড় থেকে মনির হোসেনের লটকন বাগান থেকে ৬ বস্তা গাঁজা উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। প্রতি বস্তায় ১৬ কেজি করে ৬ টি বস্তায় মোট ৯৬ কেজি গাঁজা ছিলো।

গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয় থেকে কাগজে কলমে আদালতে পাঠানো হয়েছে মর্মে দেখানো হয়। প্রকৃতপক্ষে এই মালামাল আদালতের মালখানায় নেয়া হয়নি। আদালতে নেয়ার আগেই পুলিশ ও বিচারকরা মিলে মাধবদীতে মায়া প্রধান নামে এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নেন। মাদক বিক্রি করার দুই দিন পর কাগজে কলমে গত ১১ মার্চ এ মাদকদ্রব্য ধ্বংস করার এক প্রমাণপত্রও তৈরি করা হয়।

এটি জানাজানি হলে নরসিংদী পুলিশ সুপারের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য। তবে আদালতের নথিতে দেখা যায় উদ্ধার হওয়া ৯৬ কেজি গাঁজা ধ্বংস করা হয়েছে।

এসব বিষয়ে ওসি কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের অফিসার অলামত জব্দ করেছেন এবং তা জব্দ তালিকা করে কোর্টে পাঠিয়েছেন। কোর্ট রিসিভ করেছেন। কোর্ট ধ্বংস করেছেন। এই অর্ডারও আমার অফিসে আছে। এখন কোর্ট ধ্বংস করেছেন না করেননি, সেটা তো কোর্টের ব্যাপার। এখানে আমার কী লায়াবিলিটি আছে? এখানে আমার তো কোনো জবাব নেই। তা ছাড়া এই আলামত ধ্বংস করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের।’

৯৬ কেজি গাঁজা বেচার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ। এখানে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।’ ওসি খন্দকার জাকির হোসেন বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মালামাল ধ্বংস করা হয়েছে। মালামাল আমার হাতে আসেওনি, আমার মাধ্যমে যায়ওনি। শুধু দায়িত্বে ছিলাম বলে আমি বলির পাঠা হলাম। আমি কোনো অপরাধ করিনি।

নরসিংদী পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান বলেন, ‘ওসি ডিবির বিরুদ্ধে উদ্ধার হওয়া গাঁজা ধ্বংস না করে বিক্রির একটি মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তাই কোনো মন্তব্য করতে চাই