এইচএসসি’র ফলাফল বিপর্যয়
ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবক সমন্নয়ে নাসিরনগর সরকারী কলেজের অধ্যক্ষের নতুন কর্মপরিকল্পনা

২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে পাশের হিসেবে (শতকরা) সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে উপজেলার একমাত্র সরকারী কলেজ নাসিরনগর সরকারী কলেজ এবং সবচেয়ে এগিয়ে আছে গোকর্ন সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজ। কিন্তু মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও প্রাপ্ত জিপিএ-৫-এর হিসেব সম্পূর্ণ বিপরীত। সবচেয়ে কম পরীক্ষার্থী রয়েছে গোকর্ন সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজে এবং সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার্থী নাসিরনগর সরকারী কলেজে। সবচেয়ে বেশি জিপিএ-৫ পেয়েছে নাসিরনগর সরকারী কলেজে, আর কোন জিপিএ-৫ পায়নি গোকর্ন সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজ।
ঘোষিত ফলাফলে এলাকাবাসীকে হতাশ না হয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন নাসিরনগর সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ রমজান আলী। নতুন প্রত্যয়ের সঙ্গে তিনি নতুন কর্মপরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাবাকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা, পুলিশের হাতে আটক ছেলে
উপজেলার ৪টি কলেজ থেকে চলতি বছরে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৭৯২ জন। এর মধ্যে ৫৭৭ জন অংশগ্রহণ করেছেন নাসিরনগর সরকারী কলেজ থেকে, অন্য ৩টি কলেজের অংশগ্রহণকারী যথাক্রমে চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজ ১২৭ জন, বিজয়লক্ষী স্কুল এন্ড কলেজ ৫৮ জন এবং গোকর্ন সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজ ৩০ জন।
উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা যথাক্রমে নাসিরনগর সরকারী কলেজ ২৭১ জন, চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজ ৬৫ জন, বিজয়লক্ষী স্কুল এন্ড কলেজ ২৮ জন এবং গোকর্ন সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজ ১৭ জন। পাশের হার যথাক্রমে গোকর্ন সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজ ৫৬.৬৭%, চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজ ৫১.১৮%, বিজয়লক্ষী স্কুল এন্ড কলেজ ৪৮.২৮% এবং নাসিরনগর সরকারী কলেজ ৪৬.৯৭%।
আরও পড়ুন: 'মা ইলিশ সংরক্ষণ-২০২৫' উপলক্ষে চাঁদপুরে নৌবাহিনীর অভিযান
উপজেলা সদরের একমাত্র কলেজের ফলাফল বিপর্যয়ে (পাশের সর্বনিম্ন হার) এলাকাবাসী হতাশ। অনেকেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকার সঙ্গে মুখোমুখি আলাপচারিতায় নাসিরনগর সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ রমজান আলী বলেন, “নাসিরনগর উপজেলার মোট পরীক্ষার্থীর ৭৩% ছাত্রছাত্রীই নাসিরনগর সরকারী কলেজের। ২০২৪ সালের প্রায় ২ শতাধিক ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করেছে এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষায়। স্থানীয় সুপারিশের কারণে কিছু দুর্বল শিক্ষার্থীকে সুযোগ দিতে হয়েছে পরীক্ষায়। এসব কারণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে ফলাফলে (পাশের হার)। এখন থেকে ছাত্রদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও আরও বেশি সম্পৃক্ত করবো শিক্ষা কার্যক্রমে। স্টুডেন্ট, টিচার ও গার্ডিয়ান তিনটি পক্ষ মিলেই গড়ে তুলবো সহযোগিতা ও জবাবদিহিমূলক শিক্ষা ব্যবস্থা। এটাই এখন আমার প্রধান পেশাগত ও নৈতিক দায়িত্ব।”
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে প্রফেসর মোঃ রমজান আলী নাসিরনগর সরকারী কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। অধ্যক্ষের এই প্রত্যয় ও কর্মপরিকল্পনাকে এলাকার সচেতন মহল তাৎক্ষণিকভাবে সাধুবাদ জানিয়েছেন।