বাণিজ্য ঘাটতি কমলে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরও কমার সম্ভাবনা: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পারলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য আমদানির শুল্ক আরও কমতে পারে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চলমান আলোচনায় এই বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে।
আজ বিকেলে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের (ইউএসটিআর) সহকারী ব্রেন্ডান লিঞ্চের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদলের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
আরও পড়ুন: এমডি নিয়োগে কঠোর শর্ত: অভিজ্ঞতার মানদণ্ড কড়াকড়ি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে শুল্ক কমানোর জন্য বিবেচনা করতে সম্মত হয়েছে। তিনি জানান, বাংলাদেশ ক্রয়ের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিমান ও অন্যান্য পণ্য আমদানি বাড়াচ্ছে। তিনি বলেন, "আমদানি ধীরে ধীরে বাড়ছে এবং যখন এটি সন্তোষজনক পর্যায়ে পৌঁছাবে, তখন শুল্ক হ্রাসের সম্ভাবনা থাকবে।"
উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ বিশেষত কৃষিপণ্য, জ্বালানি এবং অন্যান্য পণ্য আমদানির মাধ্যমে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা করছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন বীজ ও তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে এমন পণ্য আমদানি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সাহাবুদ্দিনকে আর্থিক সুবিধা দিতে ডাচ-বাংলার নিত্যনতুন কত কৌশল
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি চুক্তির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, এই মুহূর্তে কোনো চুক্তি হচ্ছে না, তবে এই আলোচনাগুলো সেই চুক্তির জন্যই পথ তৈরি করছে। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমদানিকারকদের কোনো বিশেষ সুবিধা দেওয়ার পরিকল্পনা নেই, কারণ ব্যক্তিগত পর্যায়ে তারা সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য আমদানি করতে পারেন।
বাণিজ্য সচিব জানান, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। গত অর্থবছরে ৬ মিলিয়ন ডলারের তুলা কেনা হলেও, এ বছরের প্রথম দুই মাসেই ২৭৩ মিলিয়ন ডলারের তুলা আমদানি করা হয়েছে, যা বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর একটি সন্তোষজনক অগ্রগতি।
এছাড়াও, তিনি জানান বোয়িং বিমান আমদানির বিষয়টি একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। যেহেতু ২০৩২ সালের আগে বিমান সরবরাহ সম্ভব নয়, তাই বাণিজ্য ঘাটতি তাৎপর্যপূর্ণভাবে কমাতে পারলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আরও বেশি অগ্রাধিকার শুল্কে প্রবেশ করা সম্ভব হবে, যা আমদানি ও রপ্তানি উভয়ই বৃদ্ধি করবে।
উপদেষ্টা আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের তুলার ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা আদায়ের চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশের মোট তুলার চাহিদার মাত্র ২ শতাংশ দেশে উৎপাদিত হয়, বাকি ৯৮ শতাংশ আমদানি করতে হয়। তাই যুক্তরাষ্ট্রের তুলা আমদানির ওপর ভিত্তি করে শুল্ক হ্রাসের চেষ্টা করা হচ্ছে।
বৈঠকে শ্রম ইস্যু নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও তিনি জানান।





