চবির শাটলে মবের ঘটনার সূত্রপাত রাম প্রসাদের হাতেই
গত চার ডিসেম্বর ক্যাম্পাস থেকে শহরমুখী ৪.৪০ ঘটিকার শাটলে এক তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফাইনান্স ডিপার্টমেন্টের ১৯–২০ সেশনের।
সিটে বসাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়। ওনার দাবি, "অন্যদের বসার সুযোগ না দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে চড়াও হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইন্সুরেন্স বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী।"
আরও পড়ুন: অবরোধের পাঁচ ঘণ্টা পর পুলিশের আলোচনার পরামর্শ, রাজি নয় শিক্ষার্থীরা
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রামপ্রসাদ সাহা বলেন, “বিকেলের ৪:৪০-এর শাটলে আমি টিউশনে যাচ্ছিলাম আমার স্টুডেন্টকে পড়ানোর জন্য। শাটলে আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে—আমি নাকি বসার জায়গা দিচ্ছি না—এটা বলে ৬–৭ জন মিলে আমাকে মারছে। শাটলে এবং শাটল থেকে নামিয়ে আমাকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। সেখানে অনেক শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকলেও কেউ আমাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। আমাকে গণপিটুনি দেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাংকিং ও ইন্সুরেন্স বিভাগের রিয়াজ শিকদার ছিল। আমি এই ইউনিভার্সিটিতে প্রায় ছয় বছরের মতো পড়াশোনা করছি। এই সময়ে আমি কোনো খারাপ কাজ কিংবা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হইনি। কারো সঙ্গে আমার কোনো শত্রুতা নেই। আমি চাই প্রশাসন এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করুক এবং বিচার নিশ্চিত করুক।”
কিন্তু একই বগিতে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, “রামপ্রসাদ সাহা সিটে অন্য কাউকে বসতে না দিলে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে সে বহিরাগত কি না জানতে চাইলে তিনি কিছু না বলে গালিগালাজ করেন এবং সর্বপ্রথম অপরপক্ষের গায়ে হাত তুলেন। পাশে একজনের গায়ে পানিও ছুঁড়ে মারেন। বারবার তার পরিচয় জিজ্ঞেস করার পরও তিনি আইডি কার্ড না দেখানোর কারণে ও গায়ে হাত তোলায় আশেপাশের শিক্ষার্থীরা তেড়ে যান। সেখান থেকে ষোলশহর পৌঁছালে, সেখানে তার মানিব্যাগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ডটি পাওয়া যায়। পরিচয় ভেরিফিকেশনের এক পর্যায়ে তিনি আবার শাটলে উঠে এসে বসেন। শাটল চলতে শুরু করলে তিনি খুব জোরে জোরে কান্না করতে থাকেন ও ভিডিও করে বলতে থাকেন—‘আমাকে মেরে ফেলতেছে, আমাকে বাঁচান।’ ওই পর্যায়ে বেশিরভাগই তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মনে করেন। পানি এবং টিস্যু আগে দেওয়া হলেও গ্রহণ করেননি; বরং সাহায্যকারীদেরও তিনি ভিডিওতে এনে মানহানি করেন।
আরও পড়ুন: গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো বলেন, “ওনিই সবার আগে ভুল করেছে। শাটলে সবসময় একটা সিটে তিনজন করে বসে, কিন্তু তিনি তিন নম্বর সিটে আরও একজনকে বসতে দিতে নারাজ। তিনি তিন নম্বরজনকে বসতে দেবেন না। তিনি-ই প্রথম গালি দেন, গায়ে হাত তোলেন। তার-ই সবচেয়ে বড় ভুল। দুই পক্ষের দোষ থাকলেও রামপ্রসাদ সাহা সবার আগে গায়ে হাত তুলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওগুলো প্রকাশ করা হয় ষোলশহর থেকে শাটল ছাড়ার অনেক পরে। ঐ সময় কিছুই হয়নি, তিনি পাগলের মতো কাঁদতে কাঁদতে ভিডিও করতে থাকেন। কারণ, মারতে গিয়ে মার খেয়ে তিনি কিছুই করতে পারেননি; সেই ক্ষোভ থেকেই ফুটেজ খাওয়ার চেষ্টা।”





