বাইডেন মনোনীত ডেভিড মিলের নিয়োগ বাতিল
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান

বাংলাদেশের আমেরিকান দূতাবাসের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের নিয়োগ বাতিল করেছে মার্কিন প্রশাসন। আমেরিকান নতুন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করার পর বাংলাদেশেও নতুন রাষ্ট্র দুত নিয়োগ করা হবে বলে জানা গেছে। আপাতত নতুন নিয়োগ পাওয়ার চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নিচ্ছেন আগামী ২০ জানুয়ারি। এর ফলে দেশটির প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল হচ্ছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মনোনীত ডেভিড মিলির ঢাকায় আসা হচ্ছে না। মার্কিন সিনেটে মনোনয়নের চূড়ান্ত শুনানি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশে আসছেন না মিলি।
বাংলাদেশে পিটার হাসের উত্তরসূরি হিসেবে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত না আসা পর্যন্ত পেশাদার কূটনীতিক ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন ঢাকায় দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি আগামীকাল (শনিবার) থেকে অন্তর্বর্তীকালীন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) হিসেবে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করবেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে তার নিয়োগের বিষয়টি জানানো হয়েছে। ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে নিকট প্রাচ্যবিষয়ক ব্যুরোতে ঊর্ধ্বতন উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। এর আগে তিনি ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স, অ্যাড ইন্টেরিম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। লাটভিয়ার রিগায় যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্কুল অব প্রফেশনাল অ্যান্ড এরিয়া স্টাডিজের ডিন এবং ন্যাশনাল ফরেন অ্যাফেয়ার্স ট্রেনিং সেন্টারের উপপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন জ্যাকবসন। এ ছাড়া ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলে ডেপুটি এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি এবং সিনিয়র ডিরেক্টর ফর অ্যাডমিনিস্ট্রেশন হিসেবেও কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তার।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব অ্যাডভান্সড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ থেকে এমএ ডিগ্রি পাওয়া জ্যাকবসন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের চাকরিতে একাধিক সম্মাননা পেয়েছেন।
এর আগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পদে পিটার হাসের উত্তরসূরি হিসেবে মনোনীত করেছিলেন বেইজিং দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন ডেভিড স্লেটন মিলকে। যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পাওয়ার আগে প্রেসিডেন্ট মনোনীত প্রার্থীকে সিনেটের শুনানিতে হাজির হতে হয়। সেই শুনানি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ডেভিড মিলের ঢাকায় আসা হচ্ছে না। ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।
২০২২ সালের মার্চ থেকে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করে আসা পিটার হাস গত বছর জুলাইয়ে ফিরে যান। এর পর থেকে মিশনে দায়িত্ব পালন করছিলেন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে ডেপুটি চিফ অব মিশন মেগান বোল্ডিন।
এদিকে, গত বছরের জুনে ওই মনোনয়নের বিষয়ে মার্কিন সিনেটে শুনানি হলেও নিয়োগটি ঝুলে ছিল। এ ঘটনার ১৭ বছর আগে দুই মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ঢাকায় যাওয়া-আসার মাঝখানেও এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। কাকতালীয় হলেও ২০০৭ সালের মতো এবারও বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব কিছুদিন পালন করবেন সিডিএ। ওই সময় ২০০৬ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব নিয়েছিলেন প্যাট্রিসিয়া বিউটেনিস। কিন্তু ১৪ মাসের মাথায় হঠাৎই মার্কিন প্রশাসন তাকে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের উপরাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেয়। ফলে তিনি বেশ তাড়াহুড়া করেই ঢাকা ছেড়ে যান। ২০০৮ সালের এপ্রিলে জেমস এফ মরিয়ার্টি পরের মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে যোগ দেওয়ার আগে ৯ মাস ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব সামলেছিলেন গীতা পাসি।