ইরানের দেহদাশতে মিলল সাত হাজার বছরের প্রাচীন গ্রাম
ইরানের দেহদাশত এলাকায় সাত হাজার বছরেরও বেশি প্রাচীন এক গ্রাম আবিষ্কার করেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। শনিবার মেহর নিউজ এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেহদাশতের প্রত্নতাত্ত্বিক দলের প্রধান জবিহুল্লাহ মাসউদিনিয়া জানান, ঐতিহাসিক বেলাদশাপুর নগরীর ভেতরেই এই নবপ্রস্তর যুগের বসতির সন্ধান মিলেছে।
তিনি বলেন, শহরের কেন্দ্রস্থলে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক খননকাজ চালাতে গিয়ে ৫ম ও ৬ষ্ঠ সহস্রাব্দ খ্রিষ্টপূর্ব যুগের বসতির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর আগে এ অঞ্চলে কোনো প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা হয়নি। অনুমতি পাওয়ার পর কয়েকটি পরীক্ষামূলক খাদ খনন করেই তারা এই গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন খুঁজে পান।
আরও পড়ুন: 'ফিফা শান্তি পুরস্কার’ পেলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
মাসউদিনিয়া জানান, উপরিভাগের স্তরগুলোতে মধ্যযুগ ও পরবর্তী ইসলামি যুগের কিছু নিদর্শন দেখা গেলেও সেগুলো সরিয়ে ফেলতেই বেরিয়ে আসে বিস্ময়কর প্রাগৈতিহাসিক স্তর। প্রাথমিক বিশ্লেষণে এই স্তরগুলোর বয়স প্রায় ৭ হাজার বছর বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, খননে ইসলামী যুগের শেষ কয়েক শতকের স্থাপত্যস্মৃতির অংশও পাওয়া গেছে। প্রত্নতাত্ত্বিক দলটি সেলজুক ও সাফাভিদ আমলের সম্ভাব্য স্থাপনা শনাক্তে ছোট একটি কর্মশালা স্থাপন করেছে। এছাড়া উদ্ধার হওয়া মৃৎপিণ্ড, সাংস্কৃতিক উপকরণ ও অন্যান্য নিদর্শন ৬ষ্ঠ ও ৫ম সহস্রাব্দ খ্রিষ্টপূর্বের বলে চিহ্নিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডনবাস ইস্যুতে কোনো ছাড় নয়, কঠোর অবস্থানে পুতিন
সবচেয়ে আকর্ষণীয় আবিষ্কারগুলোর একটি হলো উত্তপ্ত পাথর—যা দিয়ে তখনকার মানুষ দুধ বা পানি গরম করত। গরম পাথর পাত্রে ফেলার এই প্রযুক্তিকে তারা সে সময় তাপায়নের বিশেষ পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করত।
মাসউদিনিয়া জানান, ১৯৫৬ সালের আকাশচিত্রে দেহদাশত কারাভানসারাইয়ের পাশে একটি ঐতিহাসিক টিলা দেখা গেলেও পরবর্তী শহুরে উন্নয়ন সেটির বেশিরভাগ অংশ ধ্বংস করে দেয়। তবু এবারের খননে সেই টিলার নিচেই নবপ্রস্তর যুগের বসতির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
খননকার্যে শহরের উত্তরে কানাত বা ভূগর্ভস্থ পানি সরবরাহ ব্যবস্থারও চিহ্ন মিলেছে। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, আবিষ্কারটি দেহদাশতের ঐতিহাসিক গুরুত্ব নতুন করে বিশ্বমানচিত্রে তুলে ধরবে।
সূত্র: মেহের নিউজ





