অভিযুক্তদের বিচার না হলে জুলাই শহীদ-আহতরা অবিচারভোগী হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও আরও দুই আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সতর্ক করেন যে, যদি এইদের বিচার এবং শাস্তি নিশ্চিত করা না হয় তাহলে দেশের অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন হবে এবং জাতি ইতিহাসের সামনে ভীরু-কাপুরুষ হয়ে যাবে। ট্রাইব্যুনাল এই বক্তব্যের পর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে বলে আশ্বাস দেন। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সর্বশেষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে বলেন, তিনি আগে বিশ্বাস করেছিলেন শেখ হাসিনা ন্যায়বিচারের মুখোমুখি হবেন। কারণ, শেখ হাসিনা অন্যকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন — 'সাহস থাকলে বিচারের মুখোমুখি হন'— কিন্তু বিচার আদায়ে সেই কথাটি তিনি হৃদয় থেকে বলেননি। অ্যাটর্নি জেনারেলের মন্তব্য, বললে আজ দেশের মাটিতে এসে বিচারের মুখোমুখি হতেন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার মামলার রায়ের তারিখ জানা যাবে ১৩ নভেম্বর
তিনি আরও বলেন, এই আসামিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে বাংলাদেশের আরও অগণিত মানুষের জীবন বিপন্ন হবে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে না পারলে বাংলাদেশের মানুষ ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে ভীরু-কাপুরুষ হয়ে রয়ে যাবে। আমি তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছি।
আরও পড়ুন: স্থায়ী প্রধান বিচারপতি: তত্ত্বাবধায়ক ফেরার মামলা এখন সবচেয়ে বড়
অ্যাটর্নি জেনারেলের যুক্তিতর্ক তুলে ধরার পর ট্রাইব্যুনাল প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। দুই পক্ষই যেকোনো মূল্যে ন্যায়বিচার পাবে।
মৌখিক সাক্ষ্য ও প্রমাণ উপস্থাপনায় বলা হয়েছে—জুলাই আন্দোলনের সময় নিহত পরিবার, আহত ও চিকিৎসকসহ মোট ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্যপ্রদানে উঠে এসেছে জুলাই গণহত্যা ও নির্যাতনের ঘটনায় নৃশংসতা, আওয়ামী লীগের শাসনকালে গুম-খুনসহ অন্যান্য অভিযোগ।
এই মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন ওই সময়কার পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি সাক্ষ্য থেকে গণহত্যার পেছনের ঘটনা ও নির্দেশদাতা ও বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নামসমূহ তুলে ধরেন। প্রসিকিউশন জানান, এখন পর্যন্ত যে সাক্ষ্য ও প্রমাণ উপস্থাপিত হয়েছে তা পৃথিবীর যেকোনো আদালতে আসামিদের অপরাধ প্রমাণে যথেষ্ট বলে তারা মনে করেন।
ট্রাইব্যুনাল এখন রায় প্রদানের পূর্বে প্রাসঙ্গিক নথি, স্বাক্ষ্য ও আইনগত তর্কগুলো মূল্যায়ন করবে। মামলার প্রক্রিয়া ও রায়ের সময়সীমা সম্পর্কে ট্রাইব্যুনাল থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পাওয়া যাবে।