সুখী হতে চান? দৈনন্দিন জীবনে এই চারটি অভ্যাস গড়ে তুলুন
সুখী হওয়ার কোনো সংক্ষিপ্ত রাস্তা নেই। একজন সুখী মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকতে চাইলে সারাজীবন ধরেই ভালো অভ্যাস ও ইতিবাচক চিন্তার চর্চা করতে হয়। মনোবিজ্ঞান বলছে, আমাদের দৈনন্দিন কিছু আচরণ মানসিক সুস্থতা ও দীর্ঘমেয়াদি সুখের মূল ভিত্তি তৈরি করে।
আরও পড়ুন: চিয়া সিড সবার জন্য নয়: যাদের খাওয়া উচিত নয়, জানুন সম্ভাব্য ঝুঁকি
আপনি যদি কখনও স্বেচ্ছায় বা অন্যায়ভাবে কারও ক্ষতি করে থাকেন, তবে সেটি আপনার অন্তরের শান্তি নষ্ট করতে পারে। তাই মনকে শান্ত রাখতে এবং সুখী থাকতে দরকার কিছু সচেতন জীবনধারা গড়ে তোলা। চলুন জেনে নেওয়া যাক — সুখী জীবনের জন্য কোন চারটি অভ্যাস গড়ে তুলবেন।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত হাসিই হতে পারে মৃত্যু! গবেষণায় উঠে এলো চমকপ্রদ তথ্য
১. প্রতিদিন কৃতজ্ঞতার চর্চা করুন
কৃতজ্ঞতা সুখী জীবনের অন্যতম শক্তিশালী হাতিয়ার। সাইকসেন্ট্রালের এক গবেষণা অনুযায়ী, জীবনের ভালো দিকগুলো স্বীকার করা ও কৃতজ্ঞ থাকা আমাদের মস্তিষ্ককে ইতিবাচক চিন্তায় মনোনিবেশ করতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন তিনটি বিষয় লিখে রাখুন যার জন্য আপনি কৃতজ্ঞ। এই অভ্যাস মানসিক প্রশান্তি বাড়াবে এবং নেতিবাচক চিন্তা কমাবে।
২. অর্থপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলুন
অন্তরঙ্গ ও অর্থবহ সম্পর্ক আমাদের সুখ ও মানসিক সুস্থতার প্রধান ভিত্তি।
২০২৪ সালে ফ্রন্টিয়ার্স ইন সাইকোলজি-তে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক উদ্বেগ ও বিষণ্ণতা কমায়।
হার্ভার্ডের বিখ্যাত Study of Adult Development গবেষণাতেও বলা হয়েছে—সম্পদ বা খ্যাতি নয়, বরং সম্পর্কই সুখী জীবনের আসল চাবিকাঠি।
তাই প্রিয়জনদের সময় দিন এবং তাদের সঙ্গে মানসম্মত সময় কাটান।
৩. মননশীলতার অভ্যাস করুন
ধ্যান ও মননশীলতা আমাদের বর্তমান মুহূর্তে মনোযোগী হতে সাহায্য করে, অতীত ও ভবিষ্যতের উদ্বেগ থেকে মুক্ত রাখে।
২০২৪ সালে ব্রিটিশ জার্নাল অফ হেলথ সাইকোলজি-তে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতিদিন মাত্র ১০ মিনিট মননশীলতা অনুশীলন করলে উদ্বেগ ১২.৬% এবং বিষণ্ণতা ১৯.২% পর্যন্ত কমে যায়।
তাই প্রতিদিন কিছু সময় ধ্যান বা শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলনে দিন। এটি আপনার মনকে শান্ত করবে ও সুখের অনুভূতি বাড়াবে।
৪. সকলের প্রতি সদয় হোন
অন্যদের প্রতি সদয় আচরণ ও সহানুভূতি প্রদর্শন সুখের অন্যতম উৎস। ছোট ছোট সদয় কাজ — যেমন কাউকে প্রশংসা করা, সাহায্য করা, বা মন দিয়ে শোনা — শরীরে ‘ভালো লাগার হরমোন’ ডোপামিন ও অক্সিটোসিনের নিঃসরণ ঘটায়।
এই হরমোনগুলো আমাদের মানসিকভাবে শান্ত ও পরিতৃপ্ত রাখে। তাই বিনিময়ের আশায় নয়, বরং মানবিকতার তাগিদে সদয় হোন।
সুখ কোনো গন্তব্য নয়; এটি এক চলমান অনুশীলন। কৃতজ্ঞতা, সম্পর্ক, মননশীলতা ও সদয়তার চর্চার মধ্য দিয়েই গড়ে উঠবে এক পূর্ণ ও সুখী জীবন।





