শেখ হাসিনাসহ ১০০ জনের বিরুদ্ধে ছয় মামলার বিচার শুরু হচ্ছে

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৬০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা ছয়টি মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়েছে। এসব মামলার আসামির তালিকায় রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে পুতুলসহ ১০০ জন।
রোববার ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব মামলাগুলো বিশেষ জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: সেনানিবাসের বাড়ি সাবজেল ঘোষণা প্রসঙ্গে ঢিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম
আদালত সূত্রে জানা গেছে, এদিন পৃথক ছয় মামলায় আসামিদের আদালতে হাজির হওয়ার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তারা অনুপস্থিত থাকায় আদালত মামলাগুলো বিচারিক কার্যক্রমের জন্য বিশেষ জজ আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে ১ জুলাই বিচারক আসামিদের হাজিরার জন্য সরকারি গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন, যা বিজিপ্রেস ৩ জুলাই প্রকাশ করে। গেজেটে বলা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে এবং তারা আত্মগোপনে থাকায় তাদের বিচার কার্যক্রম অনুপস্থিতিতেই সম্পন্ন করা হতে পারে।
আরও পড়ুন: সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আহত বিজিবি সদস্যকে ঢাকা সিএমএইচে স্থানান্তর
চলতি বছরের ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে দুর্নীতির অভিযোগে ছয়টি মামলা দায়ের করে দুদক। মামলাগুলোর তদন্ত শেষে ১০ মার্চ চার্জশিট জমা দেওয়া হয়।
প্রথম মামলা দায়ের করেন সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া, যেখানে শেখ হাসিনা ও শেখ পুতুলসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। পরে আরও ২ জন যুক্ত হয়ে চূড়ান্ত আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮ জনে।
১৩ জানুয়ারি তিনটি মামলা হয়। এর মধ্যে একটিতে প্রধান আসামি শেখ রেহানা, অন্য দুটিতে আজমিনা সিদ্দিক ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিককে প্রধান আসামি করে শেখ হাসিনা, টিউলিপসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
১৪ জানুয়ারির দুই মামলায় শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তদন্তে নতুন আসামি যুক্ত হওয়ায় মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১০০।
মামলার অগ্রগতি বিষয়ে দুদক-এর প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, “প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির ছয়টি মামলায় গেজেট প্রকাশিত হয়েছে এবং মামলাগুলো বিচারের জন্য প্রস্তুত। এখন বিশেষ জজ আদালতে এসব মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হবে।”
এই মামলাগুলোর শুনানি শিগগিরই শুরু হবে বলে জানা গেছে। মামলাগুলোতে সাক্ষী হিসেবে থাকছেন প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তা, রাজউকের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার সরকার চলতি বছরের জানুয়ারিতে পদত্যাগ করে। এরপর এসব মামলা অনুসন্ধানে গতি পায় এবং দুদক তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা এসব মামলায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মামলাগুলোর বিচার কীভাবে এগোয়, সেটিই এখন দেশের রাজনৈতিক ও আইনি অঙ্গনে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে।