প্রধান উপদেষ্টা সহ সকল নেতৃবৃন্দের শোক
ইসলামী ভাবধারা থেকে যেভাবে কমিউনিস্ট আন্দোলনে জড়িয়েছিলেন বদরুদ্দীন উমর

লেখক, গবেষক ও জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি বদরুদ্দীন উমর মারা গেছেন। রোববার সকালে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় আক্রান্ত ছিলেন বদরুদ্দীন উমর।
গত দুই মাসে দুই দফায় শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে তাকে হাসাপতালে ভর্তি করা হয়েছিলো বলে তার ঘনিষ্টজনেরা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন ঠেকানোর কোনো শক্তি নেই : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বলেন, জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয়েছিলো। সুস্থ হওয়ার পর তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। অগাস্ট মাসের শেষদিকে তিনি আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে আরেক দফা হাসপাতালে নেয়া হয়েছিলো। কয়েকদিন আগে তিনি বাসায় ফিরেছিলেন। এরমধ্যেই রোববার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শ্যামলীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে সকাল ১০টার কিছু পরে তিনি মারা যান।
২০০৩ সালে তার নিজের হাতে গড়া জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে রাজনৈতিক দলটির সভাপতি ছিলেন বদরুদ্দীন উমর।
আরও পড়ুন: ক্যালেন্ডার মেনে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে পেশাজীবন শুরু করা বদরুদ্দীন উমর পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও শেষ পর্যন্ত শিক্ষকতা পেশায় ছিলেন না তিনি।
বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ছিলেন তিনি। এক সময় পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন বদরুদ্দীন উমর।
মার্কসবাদী তাত্ত্বিক, লেখক ও রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমরের জন্ম ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর, বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে। তার বাবা আবুল হাশিম ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠন ছিলেন। ১৯৫০ সালে তারা সপরিবারে ভারত থেকে বাংলাদেশে চলে আসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে ১৯৫৩ সালে স্নাতক ও ১৯৫৫ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্নের পর ১৯৬১ সালে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিপিই ডিগ্রি অর্জন করেন।
বদরুদ্দীন উমরের রাজনীতি ও সমাজ নিয়ে চিন্তা, আগ্রহ বা দায়বোধ তৈরি হয় মূলতঃ পারিববারিক সূত্রে। তার বাবা আবুল হাশিম ছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত।
বদরুদ্দীন উমর তার বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, শুরুর দিকে তার চিন্তা-ভাবনায় ইসলামী প্রভাব থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর তাতে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। সেসময় কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা এবং জানাশোনা বাড়তে থাকে।
তবে, অক্সফোর্ডে পড়তে যাওয়ার পর তার মার্ক্সপন্থী চিন্তা-ভাবনা পূর্ণতা পায়।