সাজানো হচ্ছে নির্বাচনী প্রশাসন

জনপ্রসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসছে নতুন সচিব, ডিসিএসপি ইউএন ও ওসিদের ফিট লিস্ট তৈরি হচ্ছে, চুক্তিভিত্তিক, চিহ্নিত দলীয় কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে সরানো হচ্ছে।
আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুবই নিকটবর্তী হওয়ায় গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপযোগী প্রশাসন সাঝানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নির্বাচনে গুরুতর দায়িত্ব পালন করা জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নতুন সচিব নিয়োগ করে পুনর্গঠন করা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো।মাঠ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জেলা প্রশাসক পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগে তৈরি করা হচ্ছে ফিট লিস্টের প্যানেল। বাছাই করা হচ্ছে তুলনামূলকভাবে সৎ দক্ষ ও নিরপেক্ষ ফ্যাসিস্ট বিরোধী কর্মকর্তাদের।
আরও পড়ুন: বিচারকদেরও জবাবদিহিতা থাকা উচিত: ট্রাইব্যুনালের অভিমত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নীতি নির্ধারকদের সূত্রে জানা যায় ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সর্বোচ্চ আন্তরিক প্রস্তুতি রয়েছে। সেই লক্ষ্যে সার্বিক প্রস্তুতির আওতায় নির্বাচনমুখী প্রশাসন সাঝাতে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে কয়েক দফা বৈঠক করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
‘৯০ সালের পর থেকে নির্বাচনের মুখ্য ভূমিকা রাখায় প্রশাসনে “লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড ‘ তৈরি করা নির্বাচনী স্টেক হোল্ডার তথা রাজনৈতিক দলগুলার অন্যতম দাবি। তবে এবারের প্রেক্ষাপটটি ভিন্ন প্রকৃতির। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী দেশ পুনর্গঠনে পালিয়ে যাওয়া পুলিশ প্রশাসনকে সাজাতে বঞ্চিত ফ্যাসিস্ট বিরোধী কর্মকর্তাদের সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়। সচিব দেয়া হয় বঞ্চিতদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ। কিন্তু দেখা যায় এদের বিরুদ্ধেও অদক্ষতা ও দলীয় আনুগত্যের বিস্তর অভিযোগ।
আরও পড়ুন: রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের লক্ষ্য উদ্দেশ্যের চেয়ে তাদের অনুগত দলীয় স্বার্থ রক্ষায় তারা বেশি তৎপর। বিএনপি’র মুখপাত্র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী একাধিকবার সংবাদ সম্মেলনে একটি ইসলামী দলের পক্ষে প্রশাসন দখলের অভিযোগ করেছেন। নির্বাচনে নিরপেক্ষ প্রশাসন সাজানোর জন্য তিনি দাবি জানিয়েছেন। কয়েকদিন আগে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এক সেমিনারে দাবি করেন গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বিএনপি ও জামাত কাড়াকাড়ি করে প্রশাসন দখল করেছে।
এক বছরেরও বেশি সময়ে এই প্রশাসন জনমনে স্বস্তি আনতে পারেনি, স্বস্তি ফেরাতে পারেনি। নির্বাচনকে ঘিরে পুলিশ ও প্রশাসনে দলীয় অনুগত কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করে দল নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের পদায়নের দাবি উঠেছে। রাজনৈতিক দল গুলোর দাবির মুখে সরকার পুলিশ ও প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করার প্রস্তুতি নিয়েছে। এ সূত্র ধরেই জনপ্রশাসন সচিব মুখলেসুর রহমানকে প্রত্যাহার করেছে। দল নিরপেক্ষ একজন সচিবকে সরকার জনপ্রশাসন সচিব নিয়োগের জন্য।
এদিকে জনপ্রশাসন সচিব নিয়োগ নিয়ে বিএনপি ও জামায়াত পন্থীরা পছন্দের প্রার্থী নিয়োগের জন্য তোর জোর শুরু করায় নিয়োগ বিলম্বিত হচ্ছে। জন প্রশাসনের বর্তমান এ পি ডি উইং নতুন করে সাজানো হবে। তারাই মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক এডিসি ও ইউ এন ও নিয়োগ দেবে।
একই সাথে বর্তমান স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনিকে বদলি করা হচ্ছে। নিয়মিত চাকুরিরত একজনকে স্বরাষ্ট্র সচিব নিয়োগ করা হচ্ছে। পরিবর্তন আসতে পারে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটিতে। পুলিশের আইজিপি বহাল থাকলেও পুলিশ হেড কোয়ার্টারের ডিআইজি প্রশাসন সহ নিয়োগ বদলি অপারেশন সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে করা হচ্ছে। ফিট লিস্ট অনুযায়ী পুলিশ সুপার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পদে লটারির মাধ্যমে নিয়োগের চিন্তাভাবনা চলছে।