পরিবেশকে প্রভাবমুক্ত রেখে সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৬:০০ অপরাহ্ন, ০২ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৬:০০ অপরাহ্ন, ০২ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে নেতিবাচক প্রভাব থেকে মুক্ত রেখে সড়ক, রেল, বিমান ও নৌপথের সমন্বিত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার (২ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত ‘সেন্ট্রাল ইন্টিগ্রেটেড মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট সেক্টর মাস্টার প্ল্যান অব বাংলাদেশ’-এর প্রান্তিক মূল্যায়ন ও কৌশলগত পরিকল্পনা বিষয়ক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে তিনি এই আহ্বান জানান।

আরও পড়ুন: চার মন্ত্রণালয় ও বিভাগে নতুন সচিব নিয়োগ

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন, বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কর্মকর্তারা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই হযবরল অবস্থায় রয়েছে। এটাকে দ্রুত শৃঙ্খলার মধ্যে না আনলে পুরো ব্যবস্থাটা অর্থনীতির জন্য গলার ফাঁসে পরিণত হবে।”

আরও পড়ুন: কয়েকটি দলের মন যুগিয়ে চলার নীতি সরকারকে বাদ দিতে হবে: তিন দলের যৌথ সভায় বক্তারা

তিনি আরও বলেন, “আমাদের কাজ করতে হবে পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করে। নদীর ওপর কোনো আঘাত করা যাবে না, পানিকে শান্ত রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, পানি আমাদের জন্য বিরাট সম্পদ।”

বৈঠকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ একটি প্রাথমিক কৌশলগত পরিকল্পনা উপস্থাপন করে, যা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা পারস্পরিক সমন্বয়ের ভিত্তিতে তৈরি করেছেন। এতে দেখানো হয়—দেশের সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থার সমন্বয় ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে কীভাবে পুরো ব্যবস্থাকে শৃঙ্খলায় আনা সম্ভব।

পরিকল্পনায় বলা হয়, বিদ্যমান রেলপথ, নৌপথ ও সড়কপথের কার্যকর ব্যবহার ও কিছু ক্ষেত্রে সম্প্রসারণ ঘটালে যোগাযোগ খাতে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সম্ভব।

যোগাযোগ খাতের সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এই পরিকল্পনার ফলে একটি শক্তিশালী ধারণা পাওয়া গেছে। এখন বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “পুরো পরিকল্পনাটি করতে হবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে মাথায় রেখে। অভ্যন্তরীণ পরিকল্পনার পাশাপাশি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার দিকেও নজর দিতে হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা যখন যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে নদীর কথা ভাবব, তখন মনে রাখতে হবে—নদীগুলোই আমাদের প্রাণ।”

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন বলেন, “যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি সামষ্টিক মডেল গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। লক্ষ্য হলো—অর্থনৈতিক লাইফলাইন তৈরি করা।”

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “যেসব এলাকায় ছোট কিছু সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে পুরো অঞ্চলকে জাতীয় কানেকটিভিটিতে আনা সম্ভব, সেখানে দ্রুত পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।”

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানান, স্থানীয় সরকার বিভাগের কাজগুলোকে আরও পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে নিতে একটি প্ল্যানার্স উইং গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, “২০৩০ সালের মধ্যে চট্টগ্রামে আরও তিনটি নতুন বন্দর চালু হবে। তাই এসব বন্দর থেকে সড়ক যোগাযোগ সহজ ও কার্যকর করতে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।”