চীন থেকে এসওয়াই-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ: প্রতিবেদন

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:৫২ অপরাহ্ন, ০৩ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১০:৫৪ অপরাহ্ন, ০৩ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকা-চীনের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিরক্ষা খাতে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে বলেই জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য উইকে ডিফেন্স সিকিউরিটি এশিয়ার রেফারেন্সে রোববার (২ নভেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার চীনের সঙ্গে আলোচনা করে এসওয়াই-৪০০ (স্থানীয় নাম ডিএফ-১২এ) পদ্ধতিতে নির্মিত মিসাইল সিস্টেম সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারি একটি সূত্র উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আধুনিক ও শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনারই অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে যে সাম্প্রতিক আমদানি বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, প্রতিরক্ষা খাতের প্রয়োজনে বাংলাদেশ যে পরিমাণ সরঞ্জাম সংগ্রহ করেছে, তার ৭০ শতাংশেরও বেশি এসেছে বেইজিং থেকে। জে-১০সি যুদ্ধবিমান ক্রয়ের খবরের পরই এসওয়াই-৪০০ গ্রহণের সংবাদ সামনে আসে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে।

আরও পড়ুন: বিএনপির যেসব প্রভাবশালী নেতা মনোনয়ন পাননি

এসওয়াই-৪০০ (ডিএফ-১২এ) সর্বপ্রথম ২০০৮ সালে ঝুহাই এয়ারশোতে প্রদর্শিত হয়েছিল। এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মি ছাড়াও কাতার ও মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনীতেও ব্যবহৃত হচ্ছে। আধুনিক সংস্করণগুলোর কার্যকরী পাল্লা প্রায় ২৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত আখ্যায়িত করা হয়েছে। স্ট্যান্ডার্ড কনফিগারেশনে এটি আটটি ক্যানিস্টার ধারন করতে সক্ষম, এবং ক্যানিস্টারে কারখানায় থেকেই প্রজেক্টাইল লাগানো অবস্থায় দীর্ঘসময় সংরক্ষণযোগ্য বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, প্রত্যেক ক্ষেপণাস্ত্র আনুমানিক ছয় মিটার লম্বা এবং ০.৪ মিটার ব্যাসের; ওয়ারহেড কনফিগারেশনের ওপর নির্ভর করে ওজন প্রায় ৯০০ থেকে ১,৩০০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। ওয়ারহেড হিসাবে উচ্চ-বিস্ফোরক ফ্র্যাগমেন্টেশন, সাবমিশন ডিস্পেন্সার এবং ক্লাস্টার পেলোডের অপশন রয়েছে।

আরও পড়ুন: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৬ আসন থেকে লড়বেন তারেক রহমান

এসওয়াই-৪০০ সিস্টেমে সক্রিয় বা প্যাসিভ রাডার এবং আইআর সিকার মিলিয়ে টার্মিনাল পর্যায়ে লক্ষ্য সনাক্তকরণ করা সম্ভব; কিছু রিপোর্ট অনুসারে এগুলো SAM (সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল) বাধা এড়াতে টার্মিনাল কৌশল প্রয়োগ করতে সক্ষম। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ম্যাক্সিমাম প্রায় ৫.৫ গুণ গতি অর্জন করতে পারে এবং ইনর্শিয়াল নেভিগেশন ও স্যাটেলাইট-অগমেন্টেশনের সমন্বয়ে একটি হাইব্রিড গাইডেন্স স্যুটে সজ্জিত।

প্রতিবেদনটি উল্লেখ করেছে যে, প্রতিটি এসওয়াই-৪০০ মাত্র ১০ মিনিটেরও কম সময়ে লঞ্চের জন্য প্রস্তুত হতে পারে এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা ছোট রকেট ব্যবহার করে দ্রুত পুনরায় লোড করা সম্ভব। তবে এই সব তথ্যগুলো সংবাদটি প্রকাশের সময় পর্যন্ত বহুনির্ভর/অসমর্থিত সূত্রে উদ্ধৃত হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক ঘোষণার ভিত্তিতে নিশ্চিত নয় বলে প্রতিবেদনই সতর্ক করে।

বাংলাদেশ ও চীনের প্রতিরক্ষা সর্ম্পকে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা চলছে। কূটনৈতিক ও সামরিক দূরদর্শীরিজনরা বলছেন—যদি এসব চুক্তি সম্পন্ন হয়, তা অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিবেশ ও কৌশলগত ভারসাম্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। কর্মকর্তারা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোন চুক্তি স্বীকার করেননি; সরকারি প্রতিক্রিয়া মিললে তা জানানো হবে।