গেরিলা প্রশিক্ষিত ৩ হাজার ক্যাডার সক্রিয়, ট্রেনিং সেন্টার থেকে আটক অর্ধশতাধিক জামিনে পালিয়েছে

সন্ত্রাস দমনে 'অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২' চালু

Sadek Ali
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৯:৪৮ অপরাহ্ন, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৯:৪৮ অপরাহ্ন, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

দেশে টার্গেট কিলিং ও নাশকতা তৈরির মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে কার্যকর নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের তিন হাজারেরও বেশি গেরিলা প্রশিক্ষিত ক্যাডার এখনও সক্রিয়। বসুন্ধরা ট্রেনিং সেন্টার থেকে আটক করা শতাধিক ক্যাডার জামিনে বের হয়ে পালিয়েছে। গেরিলা প্রশিক্ষিত ক্যাডারদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় তারা এখনো আরো শক্তি নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। যার সর্বশেষ পরিণতি টার্গেট কিলিং এর উদ্দেশ্যে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে একটি গুলি। এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রশিক্ষিত আওয়ামী দুর্বৃত্তদের ধরতে সারাদেশে ডেভিল হান্ট ফেইস-টু চালু করেছে স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়। 

দেশের সর্বশেষ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের নিয়ে কোর কমিটির বৈঠকে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন কোনভাবেই নাশকতা করে জাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে দেওয়া হবে না। দুর্বৃত্তদের দপ্তরে অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেস্ট টু শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন: রোকেয়া পদকজয়ীদের প্রধান উপদেষ্টার সংবর্ধনা

জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাসিস্ট টেরোরিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে 'অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২' চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।

উপদেষ্টা বলেন, লুট হওয়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। এটিকে আরো জোরদার ও বেগবান করার জন্য এবং ফ্যাসিস্ট টেরোরিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে কোর কমিটি 'অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২' অবিলম্বে চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। 

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৩৯৭, মৃত্যু নেই

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটি সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখ সারির যোদ্ধা ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করছে এবং বিষয়টিকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। তিনি বলেন, অনতিবিলম্বে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ হামলায় জড়িত কাউকে কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। উপদেষ্টা এ বিষয়ে জনগণের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন এবং অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

উপদেষ্টা বলেন, ওসমান হাদির ওপর আক্রমণের ঘটনা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত বা বানচাল করার যেকোনো ধরনের অপচেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে কেউ ধরিয়ে দিতে পারলে সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। উপদেষ্টা এ সময় ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতার জন্য সবাইকে দোয়া করার অনুরোধ করেন।

উপদেষ্টা আরো বলেন, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে এতদিন শুধু সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারীদের অনুকূলে ইস্যু করা হতো। তিনি বলেন, এখন জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে যারা আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স চাইবে, তাদেরকেও লাইসেন্স ইস্যু করা হবে।

অনুসন্ধানে জানা যায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পর সারাদেশে ছাত্রলীগ যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিশ্বস্ত তরুণ নেতাদের সংগঠিত করে ৫০০০ সদস্যের একটি গেরিলা বাহিনী গঠন করা হয়। গোপালগঞ্জের ওসিকে টেলিফোনে হুমকি দিয়ে গেরিলা বাহিনী প্রথম আত্মপ্রকাশ করে।  ভারতে পলাতক কর্মী দেশের দুর্গম এলাকাসহ বসুন্ধরা এবং উত্তর আবাসিক এলাকায় কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া নিয়ে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের অধীনে সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।  প্রশিক্ষণের খবর পায় পুলিশ। রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলা করেছে পুলিশ। বিভিন্ন স্থানে অভিযান করে আটক করা হয় প্রশিক্ষক মেজর সাদিকসহ শতাধিক।  তাতে বলা হয়েছে, গত ৮ জুলাই বসুন্ধরাসংলগ্ন কেবি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ একটি গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৈঠকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা মিলে ৩০০-৪০০ জন অংশ নেন। তাঁরা সেখানে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। বৈঠকে পরিকল্পনা করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পাওয়ার পর সারা দেশ থেকে লোকজন এসে ঢাকায় সমবেত হবেন। তাঁরা ঢাকার শাহবাগ মোড় দখল করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে দেশে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করবেন। তাঁরা সেখানে এসব ষড়যন্ত্র করেছিলেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) ওই মামলার তদন্ত করছে। 

এই মামলা তদন্তসংশ্লিষ্ট ডিবি সূত্র জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা রয়েছেন। ‘তারা প্রিয় স্বদেশ’, ‘এফ ৭১ গেরিলা’, ‘বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম’, ‘প্রজন্ম ৭১’, ‘শেখ হাসিনা’সহ বিভিন্ন হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপের সদস্য। একটি গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করে জানতে পেরেছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ওই গোপন সভার আয়োজন করা হয়েছিল। ওই গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ১২ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকার একটি বাসা থেকে যুবলীগ নেতা সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে ভাটারা থানা-পুলিশ। ওই দিন একই এলাকার একটি বাসা থেকে আওয়ামী লীগের নেত্রী শামীমা নাসরিনকে (শম্পা) গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর স্বামী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। দুজনকে গ্রেপ্তারের পর ১৩ জুলাই ভাটারা থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, সোহেল রানা ও শম্পাকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য যাচাই করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই বৈঠকে অংশ নেওয়া মেজর সাদিকুল হক ওরফে মেজর সাদিককে হেফাজতে নেওয়া হয়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর  সূত্র জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে বরগুনার যুবলীগ নেতা সোহেল রানা এবং গোপালগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেত্রী শামীমা নাসরিন বলেছেন, মেজর সাদিকের নির্দেশে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তৃণমূল আওয়ামী লীগ কর্মীদের সংগঠিত করে বিভিন্ন স্থানে নাশকতা চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ভাটারা থানা এলাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ই-ব্লকের ৭ নম্বর রোডের কে বি কনভেনশন সেন্টারের দ্বিতীয় তলা ভাড়া নেওয়া হয়। মেজর সাদিক সেদিন সরকার উৎখাতে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন।

তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, তিনি পরিকল্পিতভাবে সারা দিন কনভেনশন হলের সব সিসি ক্যামেরা বন্ধ রেখেছিলেন। তাঁদের ভাষ্যমতে, সেখানে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীসহ সমবেতদের নাশকতার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। এর আগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আরও অন্তত চারটি প্রশিক্ষণ হয়েছিল। তবে সবগুলো প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভিডিও ফুটেজ নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।

এদিকে গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত দ্য ডিসেন্টের অনুসন্ধানে অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে। দীর্ঘদিনের আওয়ামী লীগের প্রশিক্ষিত ক্যাডার। ৫ আগস্ট এর পর তাকে দুইবার আটক করা হলেও জামিন পেল কিভাবে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

দ্য ডিসেন্টের দাবি- ইনকিলাব কালাচারাল সেন্টার থেকে সংগৃহীত ৯ ডিসেম্বরের সিসিটিভি ফুটেজ, পুলিশের সংগৃহীত ১২ ডিসেম্বরের হামলার সিসিটিভি ফুটেজ, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এবং ফেসবুক/ইনস্টাগ্রামে ফয়সাল করিম মাসুদ নামক অ্যাকাউন্ট এবং আওয়ামীপন্থি বিভিন্ন পেইজ ও ব্যক্তির প্রোফাইলে পোস্ট করা ৫০টিও বেশি ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে—ওসমান হাদীর ওপর বাইকের পেছন থেকে গুলি করা ব্যক্তিটির চেহারার সাথে ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান নামক এক ব্যক্তির চেহারা মিলে যাচ্ছে। তিনি রাজধানীর আদাবর থানা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন বলে সংবাদমাধ্যমে পুরোনো খবর থেকে জানা গেছে। ২টি ফেইস ডিটেকশন অ্যাপে ফয়সাল করিমের একাধিক ছবি তুলনামূলকভাবে যাচাই করেও ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের সিসি ফুটেজে দৃশ্যমান ব্যক্তির মিল পাওয়া গেছে। ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে একাধিক মূলধারার সংবাদমাধ্যমে ফয়সাল করিমের ছবিসহ খবর প্রকাশিত হয়েছিল, রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকায় একটি অফিসে ঢুকে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুট ও ডাকাতির মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে ফয়সাল করিম র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। যদিও পরে মাস খানেক পরে কীভাবে তিনি ছাড়া পান সে বিষয়ে কোনো সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।এদিকে আলজাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তার এক পোস্টে দাবি করেন, ওই ব্যক্তির নাম ফয়সাল করিম মাসুদ (ছদ্মনাম দাউদ বিন ফয়সাল)। তিনি সাবেক ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি, ঢাকা মহানগর উত্তর এবং আদাবর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।

আরেক পোস্টে সায়ের লেখেন, ওসমান হাদির আক্রমণকারীদের একজন হিসেবে উল্লেখ করা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ৮ নভেম্বর ২০২৪ ঢাকার আদাবরে একটি স্কুলে ঢুকে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিল। তার কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয় বলে পোস্টটিতে উল্লেখ করা হয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন- এমন ব্যক্তি জামিন পেলেন কীভাবে?

এর আগে, গত ১৩ নভেম্বর গভীর রাতে দেওয়া একটি পোস্টে শরিফ ওসমান হাদি নিজেকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এবং সরাসরি আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন।