সন্তান জন্ম দিলেই নগদ টাকা!

Any Akter
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:১০ অপরাহ্ন, ০৫ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ২:২৯ পূর্বাহ্ন, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

সন্তানের মুখে মা বা বাবা ডাক শুনতে সবাই চান। কিন্তু এক সময় চীন নিজেরাই সেই সুযোগটা সীমিত করে দিয়েছিল ‘এক সন্তান নীতি’র মাধ্যমে। বর্তমানে সেই পুরনো নীতির ফলেই ভুগতে হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতির দেশটিকে। ভয়াবহভাবে কমে যাচ্ছে জন্মহার, বাড়ছে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা, হ্রাস পাচ্ছে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী। এই সংকট মোকাবিলায় এবার অভিনব এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীনের সরকার— সন্তান জন্ম দিলেই দম্পতিদের হাতে তুলে দেওয়া হবে নগদ অর্থ।

সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইট টাইমস–এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শুরু থেকেই চীনের প্রতিটি দম্পতি যারা সন্তান জন্ম দিয়েছেন, তারা পাচ্ছেন বছরে ৩,৬০০ ইউয়ান (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৮ হাজার ৪৮৪ টাকা)। এই ভাতা মিলবে সন্তানের বয়স তিন বছর হওয়া পর্যন্ত, অর্থাৎ সর্বমোট তিন বছরের জন্য।

আরও পড়ুন: খুব শিগগিরই কাসেমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকবে দুদক

চীনের সরকারি কর্মকর্তারা জানান, এ উদ্যোগ শুধু নগদ ভাতা দিয়েই সীমাবদ্ধ নয়; বরং শিশুদের লালন-পালন, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার খরচে আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে পুরো পরিবারকেই উৎসাহিত করা হবে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে চীনের জনসংখ্যা প্রায় ১৪১ কোটি। দীর্ঘদিন বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হলেও ২০২৩ সালে সেই তকমা হারিয়ে এখন দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দেশটি; ভারতের অবস্থান বর্তমানে প্রথম।

চীন ১৯৮০-এর দশকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ‘এক সন্তান নীতি’ চালু করেছিল। দীর্ঘদিন সেই নীতি কঠোরভাবে কার্যকর থাকায় জন্মহার আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায়। ফলে ২০১৬ সালে নীতি শিথিল করে চালু করা হয় ‘দুই সন্তান নীতি’। পরে ২০২১ সালে আবার চালু হয় ‘তিন সন্তান নীতি’। কিন্তু জন্মহারে ইতিবাচক কোনো পরিবর্তন আসেনি বরং ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪—টানা তিন বছর দেশটি নিম্ন জন্মহারের রেকর্ড করেছে।

আরও পড়ুন: মাইলস্টোনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত: দগ্ধ শিক্ষার্থী জারিফের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ৩৪

জাতিসংঘের এক পূর্বাভাস অনুযায়ী, চীনের জনসংখ্যা কমতে কমতে ২০৫০ সালের মধ্যে ১৩০ কোটিতে এবং ২১০০ সালের মধ্যে তা আরও কমে ৮০ কোটিতে নেমে আসতে পারে।

চীন সরকারের এই নতুন অর্থনৈতিক প্রণোদনামূলক উদ্যোগে কতটা সাড়া মিলবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে। তবে demography (জনসংখ্যা) বিষয়ে বিশ্বজুড়ে এটি এখন একটি আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।