খালেদা জিয়াকে ‘ইলেক্টিভ ভেন্টিলেটর সাপোর্টে’ রাখা হয়েছে

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ২:৫০ অপরাহ্ন, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২:৫০ অপরাহ্ন, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি হওয়ায় তাকে বর্তমানে ‘ইলেক্টিভ ভেন্টিলেটর সাপোর্টে’ রাখা হয়েছে। তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

বিবৃতিটি শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমে পাঠান।

আরও পড়ুন: এভারকেয়ারে হাদির পরিবারের পাশে ডা. জুবাইদা রহমান

এতে বলা হয়, ৭৯ বছর বয়সি বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার, কিডনি, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আরথ্রাইটিস ও ইনফেকশনজনিত জটিলতায় ভুগছেন। 

নিজ বাসভবনে অবস্থানকালে তার শ্বাসকষ্ট, কাশি, জ্বর ও শারীরিক দুর্বলতা দেখা যায়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ২৩ নভেম্বর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তি-পরবর্তী পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তাঁর ফুসফুস, হৃদযন্ত্র ও কিডনির অবস্থার দ্রুত অবনতি পরিলক্ষিত হওয়ায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে কেবিন থেকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ)-এ স্থানান্তরিত করা হয়।

আরও পড়ুন: ওসমান হাদির ভাইয়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ, সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস

বর্তমান অবস্থা ও চিকিৎসা

মেডিকেল বোর্ডের বিবৃতিতে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বেশ কিছু জটিলতা তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়-

গত কয়েক দিনের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার স্বাস্থ্যে বেশ কিছু জটিলতা পরিলক্ষিত হয়।

শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া, রক্তে অক্সিজেন কমে যাওয়া এবং কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় প্রথমে উচ্চমাত্রার ন্যাজাল ক্যানুলা ও বাইপ্যাপ মেশিনের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ফুসফুস ও অন্যান্য অঙ্গকে বিশ্রাম দিতে তাকে ইলেক্টিভ ভেন্টিলেটর সাপোর্টে নেওয়া হয়।

শরীরে গুরুতর ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাল ইনফেকশন থাকায় খালেদা জিয়াকে উন্নত অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

গত ২৭ নভেম্বর খালেদা জিয়ার একিউট প্যানক্রিয়েটাইটিস ধরা পড়ে, যার নিবিড় চিকিৎসা চলছে। এ ছাড়া কিডনির কার্যক্ষমতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ডায়ালাইসিস শুরু করা হয়েছে, যা এখনো নিয়মিত দিতে হচ্ছে।

পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ এবং ডি আই সি (Disseminated Intravascular Coagulation) এর ফলস্বরূপ খালেদা জিয়াকে নিয়মিত রক্ত ও রক্তের বিভিন্ন উপাদান ট্রানফিউশন দিতে হচ্ছে।

সব চিকিৎসার পরও জ্বর না কমায় এবং ইকো কার্ডিওগ্রাফিতে ‘এওর্টিক ভালভ’-এ সমস্যা দেখা যাওয়ায় TEE (ট্রান্স ইসোফেজিয়াল ইকো) করা হয়। এতে ইনফেকটিভ এন্ডোকার্ডাইটিস ধরা পড়ে এবং তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা শুরু করা হয়েছে।

পর্যবেক্ষণ ও বোর্ডের অনুরোধ

দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড  প্রতিদিন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। মেডিকেল বোর্ড জনসাধারণের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানিয়েছে, ‘কোনো অনুমান বা ভুল তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখুন। রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষায় সবাই সহযোগিতা করুন।’

পাশাপাশি মেডিকেল বোর্ড ও পরিবারের পক্ষ থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করা হয়েছে।