হাদি হত্যাচেষ্টা: পল্টন থানায় মামলা, ছয়জন গ্রেপ্তার
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ভোর ৫টা ২০ মিনিটের দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পল্টন থানার ডিউটি অফিসার উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) রকিবুল হাসান।
এএসআই রকিবুল হাসান জানান, ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় পল্টন থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার বাদী হিসেবে হাদির এক আত্মীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে মামলাটি সংবেদনশীল হওয়ায় বাদীর নাম ও মামলার নম্বর তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। মামলাটি তদন্ত করছেন পল্টন থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ইয়াসিন মিয়া।
আরও পড়ুন: পরিবারের সিদ্ধান্তে হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি
এদিকে এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন— হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক, সীমান্ত দিয়ে মানুষ পাচারকারী চক্রের দুই সদস্য এবং মূল অভিযুক্ত ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও আরও এক নারী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, হামলার পেছনের পরিকল্পনা ও অর্থের যোগান সংক্রান্ত বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শরিফ ওসমান হাদি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক এবং অভ্যুত্থান-অনুপ্রাণিত রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন ‘ইনকিলাব মঞ্চ’-এর মুখপাত্র। তিনি ঢাকার ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে নিয়মিত গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
আরও পড়ুন: হাদির ওপর হামলা: ‘ভারতের স্বার্থরক্ষাকারী’ আখ্যায়িত করে শ্যুটারের প্রশংসা
গত ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে আসা দুই আততায়ী খুব কাছ থেকে হাদির মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
বর্তমানে শরিফ ওসমান হাদি এভারকেয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, তার অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। চিকিৎসার অগ্রগতির ওপর নির্ভর করে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আলোচনায় আসা ফয়সাল করিম দীর্ঘদিন ধরে হাদির নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ফয়সাল করিম নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মোহাম্মদপুর এলাকার নেতা ছিলেন এবং তাকে হামলার অন্যতম সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করে নাগরিকদের কাছ থেকে তথ্য চাওয়া হয়েছে।





