ভূমিকম্পের সময় প্রকৃতিতে ঘটে বিস্ময়কর বহু ঘটনা

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩:১৭ অপরাহ্ন, ২১ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৩:১৭ অপরাহ্ন, ২১ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্পের মাত্রা ও ঘনত্ব ক্রমেই বাড়ছে। ভূমিকম্পের পরপরই এ নিয়ে নানা আলোচনা হয়, তবে প্রকৃতিতে এ সময় ঘটে যাওয়া বহু বিস্ময়কর ঘটনা সম্পর্কে অনেকেই অজ্ঞাত। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভূমিকম্প শুধু ভূ-পৃষ্ঠকেই নাড়িয়ে দেয় না—এটি পৃথিবীর ঘূর্ণন, প্রাণীর আচরণ থেকে শুরু করে মহাসাগরীয় প্লেট পর্যন্ত নানা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সৃষ্টি করে।

নিচে ভূমিকম্পের সময় ও পরবর্তী সময়ে ঘটে যাওয়া এমন কয়েকটি বিস্ময়কর তথ্য তুলে ধরা হলো—

আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়াহ’ ধেয়ে আসছে, বন্দরে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত

দিনের দৈর্ঘ্য কমতে বা বাড়তে পারে

২০০৯ সালের ১১ মার্চ জাপানের উত্তর-পূর্বে ৮.৯ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর পৃথিবীর ভরের বণ্টনে পরিবর্তন ঘটে। এর প্রভাবে গ্রহটির ঘূর্ণনগতিতে সামান্য বৃদ্ধি পায় এবং দিনের দৈর্ঘ্য ১.৮ মাইক্রো সেকেন্ড কমে যায়।

আরও পড়ুন: ঢাকায় কমছে দিনের তাপমাত্রা, শুষ্ক আবহাওয়া থাকার পূর্বাভাস

সান ফ্রান্সিসকো সরে যাচ্ছে লস অ্যাঞ্জেলসের দিকে

বিজ্ঞানীদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো শহর বছরে গড়ে দুই ইঞ্চি করে লস অ্যাঞ্জেলসের দিকে সরে যাচ্ছে—যে গতিতে মানুষের নখ বাড়ে। সান অ্যান্ড্রেয়াস ফল্টের দুই পাশ পরস্পরকে ছাড়িয়ে যাওয়ায় এ পরিবর্তন ঘটে। এভাবে চলতে থাকলে কয়েক লাখ বছর পরে দুটি শহর একত্রে মিলিত হবে।

ভূমিকম্পের আগে স্থির পানিতে গন্ধ

পুকুর, হ্রদ বা জলাশয়ের স্থির পানি ভূমিকম্পের আগে দুর্গন্ধযুক্ত বা সামান্য উষ্ণ হয়ে উঠতে পারে। মাটির নিচে প্লেট সরে যাওয়ার ফলে নির্গত গ্যাস পানিতে রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটায়।

২০০৯ সালের ইতালির এক ভূমিকম্পের আগে একটি স্থানের ব্যাঙ হঠাৎ উধাও হয়ে গিয়েছিল এবং ভূমিকম্পের পর আবার ফিরে আসে।

ভূমিকম্প শেষ হলেও পানিতে ঢেউ চলতে থাকে

ভূমিকম্পের পরও সুইমিং পুল বা পুকুরের পানিতে কয়েক ঘণ্টা ধরে ঢেউ দেখা যেতে পারে। ১৯৮৫ সালে মেক্সিকোতে ভূমিকম্পের পর ২,০০০ কিলোমিটার দূরের অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলের পানি প্রচণ্ড নড়ে ওঠে এবং প্রায় শেষ হয়ে যায়।

বেশিরভাগ ভূমিকম্প প্রশান্ত মহাসাগরে

পৃথিবীতে মোট ভূমিকম্পের ৯০ শতাংশ ঘটে প্রশান্ত মহাসাগরীয় "রিং অব ফায়ার" এলাকায়, যেখানে টেকটোনিক প্লেটের অত্যন্ত সক্রিয়তা রয়েছে।

চিলির শহর সরে গেছে ১০ ফুট

২০১০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি চিলির কনসেপসিয়ন শহরে ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে পৃথিবীর কঠিন ভূ-পৃষ্ঠ ফেটে যায়, এবং শহরটি পশ্চিম দিকে ১০ ফুট সরে যায়।

এভারেস্টের উচ্চতা কমে যায়

২০১৫ সালে নেপালের ৭.৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প শুধু ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিই ঘটায়নি, বরং হিমালয়ের বেশ কয়েকটি পর্বতের উচ্চতায়ও পরিবর্তন আসে। এভারেস্টের উচ্চতা প্রায় এক ইঞ্চি কমে যায়।

প্রাণীর আচরণে অস্বাভাবিকতা

ভূমিকম্পের আগে প্রাণীরা অস্বাভাবিক আচরণ করে। ইন্দোনেশিয়ায় ২০০৪ সালের সুনামির আগেও বহু পশুপাখি উঁচু এলাকায় ছুটে যেতে দেখা যায়। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, প্রাণীরা মানবদেহের বাইরে থাকা অতি ক্ষুদ্র কম্পনও আগে থেকেই টের পায়।