কমপ্লিট শাটডাউনে পৃথক পৃথক হামলায় ওসি সহ ৩০ জন আহত

Abid Rayhan Jaki
সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৭:০৭ অপরাহ্ন, ১৮ জুলাই ২০২৪ | আপডেট: ৬:১৮ পূর্বাহ্ন, ১৫ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

কমপ্লিট শাটডাউনের অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রায় আড়াই ঘন্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে কোটা আন্দোলনকারীরা। জেলার সদর ও সরাইলে কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে সরাইলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে ৩০জন আহত হয়েছে। 

বৃহষ্পতিবার সকালে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর আশুগঞ্জ টোল প্লাজা এলাকার দুই পাশের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এতে মহাসড়কের উভয় দিকে প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা গিয়ে তাদের বাধা দিলে আন্দোলনকারীরা রাস্তায় বসে যায়। এসময় শিক্ষার্থীরা পুলিশদের উদ্দেশ্য করে ভুয়া ভুয়া ¯েøাগান দেয়। পরে টোলপ্লাজা কাউন্টারের সামনে বসে বিক্ষোভ করতে থাকে শিক্ষার্থীরা। পরে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাক ও আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাহিদ আহমেদ আন্দোলনকারীদের প্রায় আড়াইঘন্টা পর তাদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। এছাড়া সকালে কোটা আন্দোলনকারী কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের সদর উপজেলার রাধিকায় সড়কের উপর মানববন্ধন করে। দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে নারী শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করার চেস্টা চালালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল আলম ও সাধারন সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শোভনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ কর্মীরা তাদের বাধা প্রদান করে। এছাড়া নবীনগরসহ বিভিন্ন উপজেলা বিক্ষোভ করেছে কোটা আন্দোলনকারীরা।

আরও পড়ুন: ৪০ কেজি গাঁজাসহ বরখাস্ত পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার

গত বুধবার (১৭ জুলাই) ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম রবিনসহ কমপক্ষে ১০জন আহত হয়। 

সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সামনে সভা করে কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসময় সভাস্থলে অবস্থান নেয় জেলা ছাত্রলীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। এসময় সভাস্থলের সামনে ও কলেজপাড়ার লেবেল ক্রসিং এলাকায় অন্তত ১৫টি ককটেল বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেলে লাঠিসোটা ও বৈঠা নিয়ে কলেজের সামনের সড়ক, লেবেল ক্রসিং এলাকা, নিউ মৌড়াইল ও কাউতলী এলাকায় মহড়া দেয়। 

আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে যৌথ টহল, নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশ ও সেনাবাহিনী একসাথে মাঠে

সভা সংক্ষিপ্ত করে মিছিলটি স্টেডিয়াম এলাকায় জেলা ও দায়রা জজের বাসভবনের সামনে আসলে ছাত্রলীগের কর্মীরা বাধা দেয়। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এসময় জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম রবিন’সহ উভয়পক্ষের ১০জন আহত হয়। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা হাতে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয়। 

বুধবার বিকেলে জেলার সরাইলে কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রলীগের দফায়-দফায় সংঘর্ষে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পুলিশসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। বিকেলে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে জড়ো হয় কোটা আন্দোলনকারীরা। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের বাধা প্রদান করলে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় উভয়পক্ষের লোকজন ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষ সরাইল সিএনজি স্ট্যান্ড, সকাল বাজার এবং উচালিয়াপাড়া মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানো গ্যাস এবং শর্টগানের গুলি নিক্ষেপ করে। ইটের আঘাতে সরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শরিফ উদ্দিনসহ ২০জন আহত হয়

বুধবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কোটা আন্দোলন নিয়ে সাধারন শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে জেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে শহরের কান্দিপাড়া থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি টিএ রোড এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক শাহীনুর রহমান, সদস্য সচিব সমীর চক্রবর্তী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলিপ, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোঃ আরমান মিয়া, কুমিল্লা বিভাগের যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তাজুল ইসলামসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন