কাঞ্চন পৌরসভায় ডাস্টবিন অকেজো, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বন্ধ, দুর্ভোগ চরমে

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চিত্র করুণ অবস্থায় দেখা গেছে। স্থানীয় বাজারের পাশে স্থাপন করা ডাস্টবিনগুলো দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন-অবহেলায় অকেজো হয়ে পড়ে আছে। শুধু তাই নয়, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বরাদ্দ হওয়া ১২টি ডাস্টবিন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে বর্জ্য ফেলার যে ব্যবস্থাপনা, সেটা বন্ধ রয়েছে। ফলে পৌরসভার জনগণের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলে পরিবেশ হুমকির মুখে চলে যাচ্ছে। মানুষের মাঝে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই। ডাস্টবিনগুলো সংস্কার করে তা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উপযোগী করে তোলার জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে বরাদ্দের পর থেকে অনেক ডাস্টবিন এখনো পর্যন্ত বক্স খোলাও হয়নি, যেখানে রেখেছে এর আশেপাশেই মানুষ ময়লা ফেলছে। ডাস্টবিনের আশেপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে শুকনো পাতা, প্লাস্টিক, ময়লা-আবর্জনা ও মানুষের খাবারের উচ্ছিষ্ট। এ যেন পরিষ্কারের দায় কারওই নেই। অবহেলার কারণে এলাকাজুড়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।
আরও পড়ুন: পাবনার উন্নয়নে চার দফা দাবিতে ১৫ দিনব্যাপী গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন
স্থানীয়দের অভিযোগ, কাঞ্চন পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে বাজারসহ মোট ১২টি ডাস্টবিন দিলেও পৌরসভার পক্ষ থেকে কোনো নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা নেই। ডাস্টবিন থাকলেও সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না এবং নিয়মিত বর্জ্য অপসারণ করা হয় না। এতে পরিবেশ দূষণসহ স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা বাড়ছে।
কাঞ্চন পৌর অধিবাসী ছানাউল্লাহ বলেন, 'যারা পৌরসভার ময়লা, রাস্তাঘাট ও আশপাশ পরিষ্কারের দায়িত্বে আছে, তাদের পৌরসভার ১০০ গজের বাইরে কখনো কাজ করতে দেখিনি। বর্জ্য একদিনের জায়গায় দুদিন আটকে গেলেই চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে, এতে পৌরসভার সাধারণ জনগণের দুর্ভোগ দিন দিন বেড়েই চলছে। দ্রুত কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ডাস্টবিন সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। তা না হলে এলাকাটি আরও অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠবে।'
আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় জেলা বিএনপির আনন্দ র্যালি, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে কথা হয় কাঞ্চন পৌরসভার বর্তমান সচিব মনিরুজ্জামানের সাথে। তিনি বলেন, 'আমি এই পৌরসভায় নতুন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বরাদ্দ হওয়া ৯টা কিংবা ১২টা ডাস্টবিন বরাদ্দ দেয় তৎকালীন পৌর মেয়র। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমাদের কিছুটা ঘাটতি আছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আমাদের আলোচনা চলছে। জমি বরাদ্দ পেলে স্থায়ীভাবে বর্জ্য ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।'
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কথা হয় কাঞ্চন পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি), রূপগঞ্জ, মো. তারিকুল আলমের সাথে। তিনি বলেন, 'বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমরা ২০২২ সালে এইড বাংলাদেশ নামে একটি সংস্থার সাথে চুক্তি করি। এ বছর আবার তাদের চুক্তি নবায়ন করেছি, তারাই মূলত বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভ্যানে করে ময়লা এনে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে। ডাস্টবিনে জমা ময়লাও তাদের পরিষ্কার করার কথা। কাজের ব্যাপারে গাফিলতির কোনো প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।'