ডিলারশিপ ও চাকরির নামে কোটি টাকা প্রতারণা: সিআইডির হাতে গ্রেফতার প্রধান হোতা

Any Akter
বাংলাবাজার রিপোর্ট
প্রকাশিত: ৪:৪৪ অপরাহ্ন, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ৯:০৫ অপরাহ্ন, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ডিলারশিপ প্রদানের এবং চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের মূল হোতাকে গ্রেফতার করেছে সিআইডির ঢাকা মেট্রো পূর্ব বিভাগ। গত ২৮ অক্টোবর বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

আরও পড়ুন: বিতর্কিত অজিতকে সিইও নিয়োগ দিচ্ছে যমুনা লাইফ!

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন (৫২), পিতা-মো. রফিকুল ইসলাম, মাতা-জহুরা খাতুন। স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম- রামনগর, থানা- করিমগঞ্জ, জেলা- কিশোরগঞ্জ। বর্তমান ঠিকানা: এ/পি-৬ নং রোডের শেষ মাথা, শেখেরটেক, থানা- মোহাম্মদপুর, ডিএমপি, ঢাকা।

আরও পড়ুন: তিন বছরের সাজা প্রাপ্ত প্রদীপ কুমারকে গ্রেফতার করেছে এটিইউ

প্রতারণার কৌশল:

প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, জাহাঙ্গীর হোসেন ভুয়া কনজুমারস ফুড প্রোডাক্টস কোম্পানির নামে ডিলারশিপ প্রদান এবং চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল। প্রতারণার কৌশল হিসেবে সে প্রথমে বিভিন্ন জায়গায় সুন্দর ও পরিপাটি অফিস ভাড়া নিতো এবং সেখানে বিভিন্ন কনজুমারস প্রোডাক্ট মজুদ করতো।

প্রাথমিকভাবে বাজার দর থেকে কম মূল্যে পণ্য সরবরাহ করে ভুক্তভোগীদের বিশ্বাস অর্জন করার পর, সে বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে অফিস বন্ধ করতো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, লিফলেট এবং অন্যান্য মাধ্যমে ডিলারশিপের বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতো।

১৫টিরও বেশি ভুয়া অফিস, অর্ধ যুগ ধরে প্রতারণা:

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অর্ধ যুগেরও বেশি সময় ধরে জাহাঙ্গীর হোসেন বিভিন্ন স্থানে ১৫টিরও বেশি ভুয়া অফিস খোলার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করেছে। সর্বশেষ মোহাম্মদপুরের রেসিডেন্সিয়াল কলেজ সংলগ্ন একটি বিল্ডিং-এর ৪র্থ তলায় ‘তালুকদার এন্টারপ্রাইজ’ নামের অফিস খোলার সময় তাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়।

২৬ মামলার আসামী:

তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি মতিঝিল থানায় মামলা নং-২২, তারিখ-২৯/১০/২০২৫ খ্রি. ছাড়াও আরও ২৫টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় অসংখ্য ভুক্তভোগী রয়েছেন।

চাকরির নামেও প্রতারণা:

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর হোসেন চাকরি প্রদানের নামেও প্রতারণা করতো। অফিসের বিভিন্ন পদে লোভনীয় বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে চাকরিপ্রার্থী থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নিতো এবং পরে অফিস বন্ধ করে গা ঢাকা দিতো।

শত শত ভুক্তভোগী, কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ:

গ্রেফতারকৃত জাহাঙ্গীর হোসেন স্বীকার করেছে, অর্ধ যুগেরও বেশি সময়ে অন্তত ৩০০ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।

গ্রেফতারকালে তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত আবেদনপত্র, জীবনবৃত্তান্ত, ভিজিটিং কার্ড, পণ্যের ভুয়া মূল্য তালিকা, কোম্পানির পণ্যের নমুনা, মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার জব্দ করা হয়েছে।

বর্তমানে মামলাটি ঢাকা মেট্রো পূর্ব ইউনিট পরিচালনা করছেগ্রেফতারকৃতকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দকরণ এবং রিমান্ডের আবেদনসহ পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম চলছে। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন ও চক্রের অপর সদস্যদের শনাক্তকরণের জন্য সিআইডির তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।