শেখ পরিবার ও ১০ শিল্পগোষ্ঠীর ৫৭ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, তদন্তে ১১ সংস্থা
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারসহ ১০ শিল্প গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অর্থপাচার, কর ফাঁকি ও ঋণ জালিয়াতির মতো নানা অনিয়মের তদন্ত শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত ১১টি তদন্ত দল। তদন্তে ইতোমধ্যেই দেশি-বিদেশি মিলিয়ে প্রায় ৫৭ হাজার ২৬০ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। এসব সম্পদের মধ্যে নগদ অর্থ, ব্যাংক হিসাব, শেয়ার, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে।
তদন্ত সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের পাশাপাশি পাচারের সঙ্গে জড়িত শিল্প গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে রয়েছে— আরামিট গ্রুপ (সাইফুজ্জামান চৌধুরী), এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, জেমকন গ্রুপ, নাবিল গ্রুপ এবং সামিট গ্রুপ।
আরও পড়ুন: এমডি নিয়োগে কঠোর শর্ত: অভিজ্ঞতার মানদণ্ড কড়াকড়ি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
তদন্তে অংশ নিচ্ছে সিআইডি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)—এবং এর সমন্বয় করছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি নিরাপদ কক্ষে নথিপত্র সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়া পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে সহায়তা করছে আন্তর্জাতিক সংস্থা— দ্য স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি (এসটিএআর), ইন্টারন্যাশনাল এন্টি করাপশন কোঅর্ডিনেশন সেন্টার (আইএসিসিসি), যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাসেট রিকভারি (আইসিএআর)।
বিএফআইইউর তথ্য অনুযায়ী, ১,৫৭৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ১,৬৮০ কোটি টাকা, ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ১৮৮টি বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) অ্যাকাউন্টে ১৫,৫০০ কোটি টাকার বেশি অর্থ ও শেয়ার স্থগিত আছে।
আরও পড়ুন: সাহাবুদ্দিনকে আর্থিক সুবিধা দিতে ডাচ-বাংলার নিত্যনতুন কত কৌশল
আদালতের নির্দেশনায় এখন পর্যন্ত জব্দ করা দেশীয় সম্পদের পরিমাণ ৪৬,৮০৫ কোটি টাকা, যার মধ্যে স্থাবর সম্পদ ৯,৯৯৯ কোটি টাকা এবং অস্থাবর সম্পদ ৩৬,৮০৬ কোটি টাকা। বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দের পরিমাণ ১০,৪৫৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, যার মধ্যে স্থাবর ৬,০৯৭ কোটি টাকা এবং অস্থাবর ৪,৩৫৪ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে দেশে-বিদেশে স্থগিত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৭,২৬০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনা এবং সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। একই সঙ্গে আদালতের নির্দেশে সম্পদ জব্দের কাজ অব্যাহত থাকবে।





