নানা আয়োজনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন

Sanchoy Biswas
আরাফাত চৌধুরী, জবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৭:০৭ অপরাহ্ন, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১২:০৩ পূর্বাহ্ন, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান, স্বপ্ন জয়ে অটল প্রাণ’ এ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) দিবস-২০২৫ উদযাপিত হয়েছে। আনন্দ র‍্যালি, চারুকলা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, মেলা, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল সহ বিভিন্ন আয়োজনে পালিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের শুভ উদ্বোধন করা হয়। পরে উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুন: ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির হামলায় সিটি ইউনিভার্সিটির ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার ক্ষতি

উদ্বোধনের পর উপাচার্যের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‍্যালি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে রায়সাহেব বাজার মোড় ও বাহাদুর শাহ উদ্যান পরিক্রমা করে পুনরায় ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়। র‍্যালি শেষে সাজিদ ভবনের নিচতলায় চারুকলা অনুষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় ‘বার্ষিক শিল্পকর্ম ২০২৫’ শীর্ষক চারুকলা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম বলেন, ২০০৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যার ফলে আজ আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা শিক্ষা ও গবেষণামূলক কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনা করতে পারছি। গত এক বছরে আমাদের অর্জন সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাই ভালোভাবে অবগত। আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট বাজেট ছিল অত্যন্ত সীমিত; বর্তমানে সেই বাজেট উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: সিটি ইউনিভার্সিটি বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ

তিনি আরও বলেন, আগামীতে আমরা একাডেমিক উৎকর্ষের ধারাবাহিকতা রক্ষা ও অগ্রগতির জন্য কাজ করব। নিয়মিত ক্লাস মনিটরিং সিস্টেম অব্যাহত থাকবে এবং ফলাফল প্রকাশে যেন অযথা বিলম্ব না হয়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষকদের গবেষণা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের গবেষণা সহকারী হিসেবে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে, যাতে তারা গবেষণার বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে।

উপাচার্য বলেন, শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গবেষণা সপ্তাহ’ আয়োজন করা হবে, যা শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উভয়ের জন্য গবেষণায় উৎসাহ জোগাবে। শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন সময়সাপেক্ষ হলেও আমরা এই সমস্যার সমাধানে আন্তরিকভাবে কাজ করছি; আশা করছি আগামী বছরের মধ্যে আংশিক সমাধান সম্ভব হবে। সবশেষে তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতি ও মর্যাদা রক্ষায় আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপই হবে আন্তরিকতার সঙ্গে, আর সেই প্রচেষ্টায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী—সবার সম্মিলিত প্রয়াসই হবে আমাদের প্রধান শক্তি।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ মোশাররাফ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে ‘জুলাই বিপ্লব–২০২৪ ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ (সুযোগ–সমস্যা–উত্তরণ)’ শীর্ষক প্রবন্ধ সংকলনের মোড়ক উন্মোচন করেন উপাচার্য। দিবসটি উপলক্ষ্যে গত বছর ২০২৪ সালে ও এ বছর ২০২৫ সালে আয়োজিত ‘বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী’-তে অংশগ্রহণকারী বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।