গাজায় নিহত আরও ৬৪, মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ গেল ১৩ জনের

ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় একদিনে আরও ৬৪ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে মানবিক সহায়তা সংগ্রহের লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৩ জন। অনাহার ও অপুষ্টিতে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারত সফরের পরিকল্পনা বাতিল করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প: নিউইয়র্ক টাইমস
হামলা ও বাস্তুচ্যুতি
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনারা গাজার সবচেয়ে বড় শহর গাজা নগরীতে আরও গভীরভাবে প্রবেশ করেছে। পুরো মহল্লা-মহল্লা ধ্বংস করে দেওয়ায় পরিবারগুলোর আর আশ্রয় নেওয়ার জায়গা থাকছে না। একই সঙ্গে খাদ্য ও জ্বালানির অবরোধের কারণে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: সাত বছর পর চীনে মোদি, বিমানবন্দরে লাল গালিচা সংবর্ধনা
মঙ্গলবার গাজা নগরীর পূর্বাঞ্চলে এক জনবহুল বাজারে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হন। আল-আহলি আরব হাসপাতাল জানায়, নিহতদের মধ্যে দুইজন নারী ছিলেন।
বাস্তুচ্যুতদের করুণ অবস্থা
আল জাজিরার যাচাইকৃত ভিডিওতে দেখা গেছে, উত্তর গাজার আস-সাফতাওয়ি এলাকা থেকে হাজারো মানুষ পালাচ্ছে। নারী-পুরুষ-শিশুরা লম্বা সারি বেঁধে হাঁটছে—কারও হাতে ব্যাগ, কেউ ঠেলাগাড়িতে জিনিসপত্র, আবার কেউ শিশুদের হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে।
গাজার বাসিন্দা ও লেখক সারা আওয়াদ বলেন,
ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো প্রতিদিন কঠিন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে— নিজ ঘরে থেকে বোমাবর্ষণের ঝুঁকি নেবে, নাকি আবারও উদ্বাস্তু হবে। আমার ঘর তো এখানেই, তাহলে কেন আমাকে পালিয়ে তাঁবুতে থাকতে হবে?
ধ্বংসযজ্ঞ ও হতাহতের হিসাব
প্যালেস্টাইনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, গত ৬ আগস্ট থেকে ইসরায়েলি অভিযানে গাজা নগরীর জায়তুন ও সাবরা এলাকায় এক হাজারেরও বেশি ভবন ধ্বংস হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, শুধু ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ১০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
মানবিক সংকট
জাতিসংঘের মানবিক দপ্তর (ওসিএইচএ) সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ক্ষুধা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে, হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়ছে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে মারা গেছেন আরও ৩ জন। গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অনাহারে মৃত্যু হয়েছে ৩০৩ জনের, যাদের মধ্যে অন্তত ১১৭ জন শিশু।