অতিরিক্ত হাসিই হতে পারে মৃত্যু! গবেষণায় উঠে এলো চমকপ্রদ তথ্য
হাসি মানেই আনন্দ, প্রশান্তি ও সুস্থতার প্রতীক। কিন্তু জানলে অবাক হবেন—এই হাসিই হতে পারে মৃত্যুর কারণ! সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনই বিস্ময়কর তথ্য উঠে এসেছে। দৈনন্দিন জীবনের ক্লান্তি, চাপ ও উদ্বেগের মাঝে মানুষ ক্রমেই হাসি হারিয়ে ফেলছে। তাই এখন বিশ্বজুড়ে গড়ে উঠছে অসংখ্য ‘লাফিং ক্লাব’, যেখানে মানুষ শরীর ও মন ভালো রাখতে হাসির অনুশীলন করেন। তবে সম্প্রতি ‘দ্য ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, হাসি যেমন শরীরের জন্য ওষুধের মতো কাজ করে, তেমনি অতিরিক্ত বা ভুল পদ্ধতিতে হাসা হতে পারে ক্ষতিকর, এমনকি প্রাণঘাতীও।
আরও পড়ুন: ৮ ঘণ্টা ঘুমিয়েও কেন ক্লান্ত লাগে? জানুন ৭টি বৈজ্ঞানিক উপায়
ইংল্যান্ডের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ১৯৪৬ সাল থেকে গত ৭০ বছরের বিভিন্ন চিকিৎসা-সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছেন—অতিরিক্ত হাসির কারণে কারও জ্ঞান হারানোর ঘটনা ঘটেছে, কারও হৃদ্স্পন্দনের ছন্দ বদলে গেছে, আবার কারও কণ্ঠনালিতে ছিদ্র পর্যন্ত তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: পেটের সমস্যা দূর করতে প্রতিদিনের অভ্যাসে আনুন এই ৫টি পরিবর্তন
অতিরিক্ত হাসির সম্ভাব্য ক্ষতি
রক্তচাপ হঠাৎ কমে যেতে পারে:
দীর্ঘ সময় বা অতিরিক্ত হাসলে রক্তচাপ হঠাৎ নেমে যেতে পারে। এতে কেউ সাময়িকভাবে জ্ঞান হারাতে পারেন বা স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়তে পারে (যদিও এমন ঘটনা বিরল)।
হৃদ্রোগীদের জন্য বাড়তি বিপদ:
হৃদ্রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে জোরে হাসা বিপজ্জনক হতে পারে। এতে হৃদ্স্পন্দনের ছন্দ বদলে যেতে পারে বা হার্টের ভাল্ব দুর্বল হতে পারে।
খাদ্যনালির ক্ষতি:
জোরে হাসার সময় ‘ইসোফেগাস’ বা খাদ্যনালিতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যা ক্ষতি করতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে ছিদ্র পর্যন্ত তৈরি হতে পারে এবং জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
স্নায়ু ক্ষতির আশঙ্কা:
অতিরিক্ত হাসির সময় শরীরে দমবন্ধ করা চাপ সৃষ্টি হলে তা স্নায়ু ক্ষতির কারণ হতে পারে।
অনিয়ন্ত্রিত মল-মূত্র ত্যাগ:
বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হাসার সময় শরীরের নিচের অংশের দুর্বল পেশির কারণে অনিচ্ছাকৃতভাবে মল বা প্রস্রাবের বেগ তৈরি হতে পারে।
চোখে চাপ ও রক্তপাতের ঝুঁকি:
অতিরিক্ত হাসলে চোখে রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে লালচে ভাব বা রক্তপাত হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে চোখের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্তও হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাসি নিঃসন্দেহে মন ও শরীরের জন্য উপকারী। তবে যেকোনো কিছুর অতিরিক্তই ক্ষতিকর। তাই সংযমের সঙ্গে হাসতে হবে। শরীরের সাড়া বুঝে হাসুন—আনন্দের জন্য হাসুন, প্রাণের ঝুঁকিতে নয়।





