নির্বাচন কীভাবে করবেন তা নিয়ে নিজেরা বসুন, রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আহ্বান ড. ইউনূসের

রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের ভবিষ্যৎ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের নিজেদের মধ্যে ঐক্যমতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি বলেন, “আজ আমরা ঐকমত্যে জুলাই সনদ করেছি। তেমনি রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়েও আপনারা রাজনৈতিক নেতারা বসে একটা সনদ করুন—কীভাবে নির্বাচন করবেন। যেমন-তেমন করে নির্বাচন করলে তো আবার পুরোনো জায়গায় ফিরে যাবেন। এতকিছু করে লাভটা কী হলো তাহলে?”
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: শাহজালাল বিমানবন্দরে রাত ৯টা থেকে ফ্লাইট চলাচল পুনরায় শুরু
ড. ইউনূস আরও বলেন, “কথা লিখলাম, কিন্তু কাজের মধ্যে সেটা মানলাম না—এটা ঠিক হবে না। তাই আমার অনুরোধ, আপনারা আবার ঐকমত্য কমিশন বা কমিটি গঠন করুন, নিজেরা বসুন এবং নির্বাচনটা কীভাবে সুন্দরভাবে, উৎসবমুখরভাবে, ইতিহাসে স্মরণীয় করে রাখা যায়—তা নির্ধারণ করুন।”
তিনি জানান, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং এই নির্বাচনে ‘ঐক্যের সুর’ বজায় রাখা হবে।
আরও পড়ুন: শাহজালাল বিমানবন্দরের আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে
“যে ঐক্যের সুর আমরা আজ এখানে বাজালাম, সেই সুর নিয়েই আমরা নির্বাচনের দিকে যাব। ঐক্যের সুরে এগিয়ে যেতে পারলে আমরা ইতিহাসে একটি স্মরণীয় নির্বাচন উপহার দিতে পারব।”
ড. ইউনূস বলেন, “এই সনদের মাধ্যমে আমরা এক বড় পদক্ষেপ নিলাম। আমরা বর্বরতা থেকে সভ্যতায় এলাম। একসময় দেশে আইন-কানুনের শাসন ছিল না, সবাই নিজের মতো চলত। এখন আমরা নিয়মমাফিক চলার পথে আছি, আর এই সনদই তার ভিত্তি।”
তিনি উল্লেখ করেন, এই সনদ তর্ক-বিতর্কের অবসান ঘটাবে এবং দেশকে একটি শৃঙ্খলিত পথে এগিয়ে নেবে।
দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের যে সম্পদ এখনো পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি, তার মধ্যে অন্যতম বঙ্গোপসাগর। এটি অত্যন্ত সম্পদশালী অঞ্চল। আমরা এখন এই অংশকে পূর্ণভাবে ব্যবহার করতে চাই।”
তিনি জানান, যদি মাতারবাড়ি, কক্সবাজার ও মহেশখালীর মতো এলাকাগুলোকে একযোগে বন্দর হিসেবে উন্নত করা যায়, তাহলে পুরো অঞ্চলটি নতুন সিঙ্গাপুরে পরিণত হবে।
“আমরা যদি সমুদ্রবন্দরগুলো আধুনিক করি, তাহলে সারা বিশ্বের জাহাজ বাংলাদেশে ভিড়তে বাধ্য হবে। আমাদের বন্দর হবে আঞ্চলিক বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু।”
ড. ইউনূস আরও বলেন, “এই বন্দর উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা নেপাল, ভুটান এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল (সেভেন সিস্টারস) অঞ্চলের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারি। এতে তারা সমৃদ্ধ হবে, আমরাও হবো।”