ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত আহত জুলাইযোদ্ধারা

Any Akter
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন, ১৭ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১১:৫১ পূর্বাহ্ন, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

চব্বিশের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত কথিত গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আজ রায় ঘোষণাকে সামনে রেখে আহত জুলাইযোদ্ধারা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়েছেন। অভিযোগকারীদের ভাষ্য—ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আসামি করে করা মামলার রায় আজ দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের পর রাকিব হাওলাদার, নিয়ামুলসহ আহত কয়েকজন জুলাইযোদ্ধা ট্রাইব্যুনাল ভবনে পৌঁছান। বেলা ১১টার পর ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ রায় ঘোষণা করবে। অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

আরও পড়ুন: দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ আগামী সপ্তাহে

মামলার তিন আসামির মধ্যে—শেখ হাসিনা ও কামাল পলাতক রয়েছেন, তবে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন গ্রেপ্তারের পর প্রায় এক বছর ধরে কারাগারে আছেন। তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন। প্রসিকিউশন জানিয়েছে, মামুনের শাস্তি নির্ধারণ আদালতের বিবেচনায় থাকবে, আর শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করা হয়েছে।

সোমবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে কঠোর নিরাপত্তায় মামুনকে প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনা হয়। রায়কে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্ট এলাকা ও ট্রাইব্যুনালের চারপাশে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব, এপিবিএন, বিজিবি, সেনাবাহিনী এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মোতায়েন আছেন। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে রোববার সন্ধ্যার পর দোয়েল চত্বর হয়ে শিক্ষাভবনমুখী সড়কে যান চলাচল সীমিত করা হয়।

আরও পড়ুন: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিশ্বনেতাদের উত্থান, পতন ও পরিণতি

মামলায় ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে ২৮ কার্যদিবসে। যুক্তিতর্ক-তর্কবিতর্ক চলে আরও ৯ কার্যদিন। গত ২৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের সমাপনী বক্তব্যের পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনের যুক্তিখণ্ডন শেষে রায়ের জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ—উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর অভিযোগে এই বিচার চলছে। মামলার ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠা অভিযোগপত্রে রয়েছে দুই হাজারের বেশি পৃষ্ঠা তথ্যসূত্র, চার হাজার পৃষ্ঠা জব্দতালিকা ও প্রমাণাদি এবং দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা শহীদদের তালিকা। মোট ৮৪ জনকে সাক্ষী করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে জমা দেয়।

রায়কে কেন্দ্র করে আদালত এলাকাজুড়ে উত্তেজনা ও সতর্কতা বিরাজ করছে।