হাসিনার শোকবার্তা ভণ্ডামির বহিঃপ্রকাশ কি না, সন্দেহ বার্গম্যানের
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের শোকবার্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই শোকবার্তাগুলোকে ‘ভণ্ডামির বহিঃপ্রকাশ’ কি না—সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জানাজায় প্রধান উপদেষ্টাসহ দেশবিদেশের যারা ছিলেন
ডেভিড বার্গম্যান তার পোস্টে স্মরণ করিয়ে দেন, ২০২৩ সালের অক্টোবরে শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছিলেন—খালেদা জিয়ার বয়স আশির ওপরে, তিনি গুরুতর অসুস্থ এবং তার মৃত্যু সময়ের ব্যাপার মাত্র। সেই বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পর শোক প্রকাশকে কীভাবে ব্যাখ্যা করা যায়—তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। শুরুতে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা তীব্র বৈরিতায় রূপ নেয়, যা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ‘দ্য ব্যাটলিং বেগমস’ নামে পরিচিতি পায়।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জানাজায় যোগ দিচ্ছেন ৩২ দেশের কূটনীতিক
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০০৮ সালের পর এই দ্বন্দ্ব রাজনৈতিক সীমা অতিক্রম করে ব্যক্তিগত পর্যায়ে পৌঁছায়। এই সময়কালে খালেদা জিয়াকে সেনানিবাসের বাসভবন থেকে উচ্ছেদ, রাজনৈতিক মামলায় জড়ানো, গৃহবন্দি ও কারাবন্দি করা হয়। বিরোধী দল এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো এসব ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে উল্লেখ করে আসছে।
ডেভিড বার্গম্যান তার পোস্টে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করতে পারলেও বিএনপিকে ভেঙে ফেলার প্রচেষ্টা সফল হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের শোকবার্তা ও সৌজন্যমূলক বক্তব্যকে কীভাবে দেখা উচিত—তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।
তিনি মন্তব্য করেন, এসব শোকবার্তা হয়তো সৌজন্যের প্রকাশ, আবার একই সঙ্গে তা গভীর রাজনৈতিক ভণ্ডামির প্রতিফলনও হতে পারে—বা হয়তো দুয়েরই মিশ্রণ।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
