নাহিদ ইসলামকে শুভকামনা, আসন ছাড়লেন জামায়াত প্রার্থী আতিকুর রহমান
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১১ সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী আতিকুর রহমান। জামায়াত নেতৃত্বাধীন জোটে নতুন করে যুক্ত হওয়া জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে শুভকামনা জানিয়ে তিনি এই আসনটি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক আবেগঘন পোস্টে আতিকুর রহমান তার সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। তিনি বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং গত প্রায় ১০ মাস ধরে ঢাকা-১১ আসনে ব্যাপক জনমত গঠনের কাজে যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: লাখো মানুষের উপস্থিতিতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত
জামায়াতের এই ত্যাগের ফলে ঢাকা-১১ (রামপুরা, বাড্ডা, ভাটারা ও হাতিরঝিলের আংশিক এলাকা) আসনে এখন জোটের একক প্রার্থী হিসেবে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
ফেসবুক পোস্টে আতিকুর রহমান তার সিদ্ধান্তকে ‘একটি বড় জিম্মাদারি থেকে মুক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি লেখেন, চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি এই আসনে ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও পেশাগত দায়িত্বের ঊর্ধ্বে উঠে সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তিনি সমর্থন আদায় করেছেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জানাজায় মোতায়েন থাকবে ১০ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
তিনি দাবি করেন, সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামী ও ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীকের পক্ষে ঢাকা-১১ আসনে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন তৈরি হয়েছিল। স্বল্প সময়ে রামপুরা ও বাড্ডা এলাকার মানুষের কাছ থেকে যে ভালোবাসা ও আস্থা পেয়েছেন, তার জন্য তিনি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
একই সঙ্গে সংগঠনের সিদ্ধান্তের প্রতি অটল আনুগত্যের কথা পুনর্ব্যক্ত করে আতিকুর রহমান ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে সম্মিলিতভাবে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।
তার এই ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেক অনুসারী ও শুভাকাঙ্ক্ষী তার রাজনৈতিক ত্যাগ, ধৈর্য ও সংগঠনের প্রতি আনুগত্যের প্রশংসা করেন। নারী কর্মীসহ সহযাত্রীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, যারা রাত জেগে পোস্টার লাগিয়েছেন ও রোদে পুড়ে মাঠে কাজ করেছেন—তাদের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময় ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে তিনি আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।
উল্লেখ্য, জামায়াত নেতৃত্বাধীন আট দলীয় জোটে সম্প্রতি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) যুক্ত হওয়ার পর আসন সমঝোতার প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান নতুন এই রাজনৈতিক জোটের ঘোষণা দেন।
বৃহত্তর ঐক্য ও জোটগত নির্বাচনী কৌশলের অংশ হিসেবে ঢাকা-১১ আসনে নাহিদ ইসলামকে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করা হলে জোটের স্বার্থে আতিকুর রহমান নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে আসেন।





