বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা

৪৩ দিন পার হলেও প্রণোদনার চাল পায়নি উপকূলের জেলেরা

Sadek Ali
বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১:০১ অপরাহ্ন, ২৮ মে ২০২৫ | আপডেট: ৩:১৭ পূর্বাহ্ন, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বঙ্গোপসাগরে ৫৮ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার ৪৩ দিন পার হলেও এখনও প্রণোদনার চাল পাইনি উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নিবন্ধিত প্রায় ৪০ হাজার জেলে। জেলা মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, নিবন্ধিত জেলের তুলনায় বরাদ্ধ অনেক কম থাকায় সকল জেলেকে এ সহায়তা দেওয়া সম্ভব না।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাগরে ৫৮ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার ৪৩ দিন পার হলেও এখনো কোনো প্রণোদনার চাল পায়নি বাগেরহাটের নিবন্ধিত ৩৯৭১২ জেলে। ফলে কষ্টে দিন কাটছে জেলেরা। গত ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে সাগরে সব ধরনের মাছ শিকারের উপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞার আগেই সকল মাছ ধরার বড় নৌকা নিয়ে তীরে ফিরে এসেছেন জেলার সাগরগামী জেলেরা। এমন অবস্থায় খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন জেলে পরিবার গুলো। বিকল্প আয়ের সুযোগ না থাকায় অনেকেই বাধ্য হয়ে ঋন নিয়ে চালাচ্ছেন সংসার। 

আরও পড়ুন: নাসিরনগরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত

মোঃ শফিকুল ইসলাম স্বপন বলেন, সাগরে মাছ ধরার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞার সময়টুকুতে সাগরে যাওয়া একেবারে নিষিদ্ধ আমাদের, তাই তার উপার্জনও বন্ধ। সরকারি সহায়তা হিসেবে যে চাল পাওয়ার কথা, তা এখনো এসে পৌঁছায়নি আমাদের কাছে। আমাদের কোনো বিকল্প আয়ের উৎস নেই তাই বাধ্য হয়ে গ্রামের এনজিও বা স্থানীয় মহাজনের কাছ থেকে উচ্চ সুদে ঋণ ও নদীতে আহরন নিষিদ্ধ চিংড়ি রেনু ধরে কোনোমতে সংসার চালাচ্ছি।

মো. এমদাদুল ইসলাম বলেন, এখন সাগরে যাওয়া নিষেধ তাই আমি আমার মাছ ধরার ট্রলার মেরামত করছি। আমারা সরকারি কোনো সহযোগীতা না পেয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। 

আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে নির্যাতিত শিশুর পাশে তারেক রহমান

বাগেরহাটের ৩৯৭১২ জেলে পরিবারের প্রায় সকলের একই অবস্থা। নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে বিকল্প আয়ের উৎস না থাকায় আহরন নিষিদ্ধ চিংড়ি চিংড়ি পোনা ধরে কোন মতে সংসার চালাচ্ছেন তারা।  

আগামী ১১ জুন শেষ হবে ৫৮ দিনের এই নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের জেলেদের একটাই প্রশ্ন ‘আমাদের বাঁচার অধিকার কবে নিশ্চিত হবে?

বাগেরহাট জেলা মৎস্য অফিসার, ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগামী ১১ জুন শেষ হবে ৫৮ দিনের এই নিষেধাজ্ঞা। বাগেরহাট জেলায় সরকারি নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ৩৯ হাজার ৭১২ জন। এর মধ্যে সরকারি ভিজিএফ চালের সহায়তা পাচ্ছেন ৮ হাজার ৬৩৪ জন। বরাদ্ধ কম থাকায় সকলকে সহায়তা করা সম্ভব নয়। উপকূলীয় এলাকার জেলেদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণসহ আর্থিক সহায়তা দিয়ে স্বাবলম্বী হিসাবে গড়ে তোলার নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।