আগে স্থানীয় নির্বাচন হয়ে গেলে নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করতে পারবে জনগণ: সিলেটে ডা. শফিক

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, স্থানীয় সরকারের সকল স্তরে পুরোপুরি একটি বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে। সারাদেশে জনগণ চরম ভোগান্তির মাঝে রয়েছে। অতি দ্রুত এর সমাধান না হলে জনদুর্ভোগ আরও বাড়বে। এ কারণে দ্রুত স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।
জামায়াত আমির বলেন, “আমরা জোরালোভাবে দাবি করছি, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যদি স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে এর মাধ্যমে এই নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং দক্ষতার প্রমাণ জাতি যাচাই করতে পারবে।”
আরও পড়ুন: তৃতীয় দফা বন্যায় তিস্তা তীরের হাজারো মানুষ পানিবন্দি
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে স্থানীয় সরকারের চারটি স্তরের কোথাও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নেই। কিছু কিছু ইউনিয়ন পরিষদে জনপ্রতিনিধি থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা কাজ করতে পারছেন না।”
তিনি বলেন, দেশের মানুষ এখন ‘চরম ভোগান্তির’ মধ্যে রয়েছে। এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তির দায়িত্ব শুধু সরকারের নয়, রাজনৈতিক দলগুলোরও রয়েছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নেত্রকোণায় যুবদলের মিলাদ মাহফিল
শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন আমিরে জামায়াত। এ সময় তিনি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটসহ আলোচিত বিভিন্ন বিষয়ে মতামত দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ইসলামী দলগুলো নিয়ে একটি নির্বাচনী মোর্চা গঠনের তৎপরতা চলছে। আমরা এর একটি গুরুত্বপূর্ণ 'ওয়ার্ক পার্টনার' হিসেবে কাজ করছি। এটি ক্ষমতা অর্জনের জন্য নয়; এটি মানবতার মুক্তির জন্য, আল্লাহর কোরআনের জন্য এবং আখিরাতে নাজাতের জন্য।”
এর আগে তিনি নগরীর কুদরত উল্লাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে “অর্থসহ আমপারা মুখস্ত প্রতিযোগিতা ২০২৫”-এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
নূর ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও দৈনিক জালালাবাদ-এর সম্পাদক মুকতাবিস উন নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “কোরআনকে জানার সঙ্গে মানার সম্পর্ক না থাকলে আল্লাহ তায়ালা ভয়ংকর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন—‘তোমরা কি কোরআনের কিছু অংশ গ্রহণ করো আর কিছু অংশ ছেড়ে দাও? তাহলে তোমাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।’”
তিনি বলেন, “কোরআন জানা ও না মানার কারণেই বিশ্বে আজ অশান্তি বিরাজ করছে। যারা মানবতাবাদের কথা সবচেয়ে বেশি বলে, তারাই আজ সবচেয়ে বেশি মানবতা লঙ্ঘন করছে। এজন্য শুধু তারাই দায়ী নয়, আমরাও দায়ী—কারণ আমরা মুসলমানরা কোরআনের শিক্ষাকে তাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারিনি। কোরআন শুধু মুখস্ত করার বিষয় নয়, বরং কোরআনের জীবন্ত বাণীকে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে হবে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ভাষা সৈনিক ও কেমুসাস সভাপতি অধ্যক্ষ মাসউদ খান, সিলেট ইসলামি সোসাইটির চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ফজলুর রহমান, জাতীয় ইমাম সমিতির মহাসচিব মাওলানা শাহ নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ ইউকে প্রবাসী হাফিজ শফিকুর রহমান মাদানি এবং ইকরা ইন্টারন্যাশনাল-এর চেয়ারম্যান, যুক্তরাজ্যের খ্যাতিমান আইনজীবী ব্যারিস্টার নাজির আহমেদ।
কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদের খতিব হাফিজ মিফতাহ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।