সুনামগঞ্জে স্বাস্থ্য সহকারীদের ছয় দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালিত

ছয় দফা দাবির বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সুনামগঞ্জে স্বাস্থ্য সহকারীরা তিন ঘণ্টার কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
এই কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন অ্যাসোসিয়েশনের সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি অশোক কুমার দাস, সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক ছাদেকুর রহমান সাদিক। এতে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জিত কান্তি চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টা ফরিদুল ইসলাম সুহেল, শহীদুল কবীর চৌধুরী, দিবাকর সরকার, মো. মুজাহিদ মিয়া, পরিমল তালুকদার এবং জেলার বিভিন্ন উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
আরও পড়ুন: ফেসবুকে কমেন্ট করা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত
বক্তারা বলেন, “স্বাস্থ্য সহকারীরা দেশের তৃণমূল পর্যায়ে শিশুদের ১০টি মারাত্মক রোগ প্রতিরোধে টিকা প্রদান করে আসছেন, যা একটি টেকনিক্যাল কাজ হলেও আমরা এখনো টেকনিক্যাল পদমর্যাদা থেকে বঞ্চিত। দীর্ঘদিন ধরে এ দাবি জানিয়ে এলেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় আমরা পদমর্যাদা ও বেতন বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।”
তারা আরও বলেন, “স্বাস্থ্যখাতে আন্তর্জাতিক সাফল্য অর্জনের পেছনে স্বাস্থ্য সহকারীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য হলেও, পূর্ববর্তী সরকারগুলো শুধু আশ্বাসই দিয়েছে, বাস্তবায়ন কিছুই হয়নি। এবার আমরা ছয় দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
আরও পড়ুন: বিজিবির হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হলো আহত হাতির চিকিৎসায় গিয়ে গুরুতর আহত ২ চিকিৎসকসহ ৩ জনকে
স্বাস্থ্য সহকারীদের ছয় দফা দাবি:
১. নির্বাহী আদেশে নিয়োগ বিধি সংশোধন করে শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক বা সমমান নির্ধারণ এবং ১৪তম গ্রেড প্রদান।
২. ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে টেকনিক্যাল পদমর্যাদা ও বেতন স্কেল ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরণ।
৩. পদোন্নতিতে ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিতকরণ।
৪. পূর্বের বিধি অনুযায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীদের অভিজ্ঞতার আলোকে স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্তি।
৫. টাইম স্কেল বা উচ্চতর গ্রেড পূর্বের মতো নতুন স্কেলের সঙ্গে সমন্বয় করে নির্ধারণ।
৬. ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা (এসআইটি) সম্পন্নকারীদের ১১তম গ্রেডে সরাসরি অন্তর্ভুক্তি।
বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আগামী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে ইপিআইসহ (টিকাদান কর্মসূচি) সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।”
স্বাস্থ্য সহকারীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের ২৬ হাজার স্বাস্থ্য সহকারীর দীর্ঘদিনের বৈষম্য নিরসনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন জারি করে তাদের ছয় দফা দাবি বাস্তবায়ন করবে। দাবির পূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও জানান নেতারা।