ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে শিক্ষক ও নৈশ প্রহরীকে বিদায়

Sanchoy Biswas
মো. মোতালেব হোসেন, সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৫:৫৩ অপরাহ্ন, ১৯ অগাস্ট ২০২৫ | আপডেট: ৭:৫০ অপরাহ্ন, ১৯ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

নাটোরে সিংড়ায় ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে অবসরে যাওয়া স্কুল শিক্ষক ও নৈশ প্রহরীকে বিদায় দিল স্কুলের বর্তমান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার কলম উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. আশরাফুল ইসলাম ও নৈশ প্রহরী আব্দুল হামিদকে এ বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ, যাত্রীদের ভোগান্তি

বিদায় সংবর্ধনা উপলক্ষে বিদ্যালয়টির মাঠে স্মৃতিচারণামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মাসুদ রেজার সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. এফএম আলী হায়দার।

আরও পড়ুন: আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ-মানববন্ধন

আরও বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. হায়দার রশিদ, নাজনীন সুলতানা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (অ.দা), আসাদ বিন সাঈদ, দত্তপাড়া মডেল ডিগ্রি কলেজ, প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম, আতিকুল রহমান প্রমুখ।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. হায়দার রশিদ জানান, দীর্ঘদিন এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন সিনিয়র সহকারী শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম ও নৈশ প্রহরী আব্দুল হামিদ। তারা সম্প্রতি অবসরে গেছেন। তাদের বিদায় সংবর্ধনা স্মরণীয় করে রাখতে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বিদায় জানানো হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘চাকরি জীবনের অবসর সবাইকে নিতে হবে। আজ আমরা সিনিয়র সহকারী শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম ও নৈশ প্রহরী আব্দুল হামিদকে বিদায় জানাচ্ছি। এটা কষ্টের হলেও সবাইকে মেনে নিতে হবে। আর তাদের এই বিদায়ের দিনটি স্মরণীয় করে রাখতেই আমাদের এ আয়োজন।’

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র আব্দুলা সাদি বলেন, আমি ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে স্যারকে পেয়েছি। আমি কোনোদিন দেখিনি স্যার আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। স্যার সব সময় আমাদের সাথে বন্ধু সুলভ আচরণ করেছেন। আমরা অনেক দুষ্টুমি করেছি, কিন্তু স্যার আমাদের কখনো চড়া গলায় কথা বলেননি। স্যার আমাদের বুঝিয়েছেন। স্যার এমন কিছু করে গেছেন যে স্যারকে ভোলা যাবে না।

সাবেক এ সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ৩৪ বছর শিক্ষকতা শেষে অবসর নিয়েছি। মহান এ পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পেরে আজ সার্থক। আমার শিক্ষকতায় অনেক শিক্ষার্থী পেয়েছি। তাদের ভালোবাসা পেয়েছি, তাদের মনে স্থান পেয়েছি বলেই শেষ বিদায়ে তারা আমাকে অশ্রুসিক্ত জলে বিদায় দিয়েছে। আমি সার্থক এমন শিক্ষার্থীদের পেয়ে। আমার শিক্ষক ও শিক্ষিকারা অনেক ভালো মনের মানুষ।