নরসিংদীতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখলের চেষ্টা

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের সেকান্দরদী গ্রামের মঞ্জুর মোল্লা (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের জমি কারসাজি করে দখল ও বসত-ঘর ভাংচুর করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত রতন, মাজারুল ও নাইম ওই ইউনিয়নের সেকান্দরী গ্রামের জিয়ার উদ্দিন ও মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে। ভুক্তভোগী মঞ্জুর মোল্লা নুরুল ইসলামের ছেলে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা সীমান্তে ৫ কোটি টাকার ভারতীয় মোবাইল ডিসপ্লে জব্দ করেছে বিজিবি
অভিযুক্ত রতন হুমকি স্বরে বলেন, আইন ভঙ্গ-টঙ্গ বুঝি না। তবে দখলের চেষ্টা করছি, দখল যার জমি তার
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আদালতের ১৪৫ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও অভিযুক্ত রতন গংরা ভুক্তভোগী মঞ্জুর মোল্লার বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও গাছপালা কেটে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়ির ওঠানে একাধিক আর.সি.সি. পিলার নির্মাণ করে চলাচলের পথ বন্ধ করে দেন। এসব ঘটনার পর স্থানীয় থানা পুলিশ এলে আবার পরক্ষণেই শুরু হয় তাদের কর্মকাণ্ড। স্থানীয় এলাকাবাসীও তাদের ভয়ে ও অত্যাচারে মুখ খুলতে সাহস পান না।
আরও পড়ুন: কাপাসিয়ায় বিএনপি নেতা শাহ রিয়াজুল হান্নানের ব্যাপক গণসংযোগ
স্থানীয় এলাকাবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মঞ্জুর মোল্লার দলিল সঠিক বিধায় তার জমিও সঠিক। সে তার প্রাপ্ত জমিতে দীর্ঘদিন ধরে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছেন। কয়েকদিন ধরে রতন, মাজারুল ও নাঈমের সাথে মঞ্জুরের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। রতন গংরা দাবি করেন যে তারাও এই জমির মালিক। কিভাবে মালিক জানতে চাইলে তারা বলেন তারা না-কি রেকর্ড সংশোধনে মালিক হবেন। এ নিয়ে আমরা এলাকাবাসী কয়েক দফা রতন, মাজাহারুলদের কে নিয়ে বসার আহ্বান করলে তারা তা কর্নপাত করেনি। তারা এলাকায় দুস্ককৃতকারী ও উশৃংখল হওয়ায় তাদের ভয়ে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না।
ভুক্তভোগী মঞ্জুর মোল্লা বলেন, আমি দুই দলিলে পায় পৌঁনে ৭ শতাংশ জমি রেকর্ডভুক্ত মালিক হয়ে পরিবার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছি। বাড়িটি সড়কের পাশে হওয়ায়, রতন মাজাহারুলের চোখ পড়ে। তারা অবৈধভাবে আমার বাড়িতে হামলা করে ঘর-দোয়ার ভেঙে এবং গাছপালা কেটে দখল করার চেষ্টা করে। নিরুপায় হয়ে আদালতে আশ্রয় নিলে আদালত ১৪৫ ধারা জারি করেন। তারা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে প্রবেশ করে নির্মাণ কাজ করছেন। পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ আসলে তারা অন্যত্রে সটকে পড়েন। পুলিশ চলে গেলে আবার পুনরায় তারা কাজ শুরু করেন। কাজে বাঁধা দিলে মারধর করতে আসেন এবং হত্যার হুমকি দেন। তাদের অত্যাচারে বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
এবিষয়ে জানতে রতন মিয়া বলেন, আর.এস ও বি.আর.এস. রেকর্ড সংশোধন করতে আমরা আদালতে গিয়েছি। রেকর্ড সংশোধন হলে আমরা জায়গার মালিক হবো। আপাতত আমার কাছে কোন কাগজপত্র বা আমাদের জায়গা দখলে নাই। তবে দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছি। আদালত তার পক্ষে ১৪৫ ধারা দিছে। আর আমরাও আদালতে রেকর্ড সংশোধনে গেছি। আইন ভঙ্গ টঙ্গ বুঝি না। দখল যার জমি তার।
থানার উপপরিদর্শক রাকিব বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার কোনো সুযোগ নেই। তদন্ত চলছে। বাদী এবং বিবাধী উভয়কে নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে বলা হয়েছে। কেউ ভঙ্গ করলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।