টঙ্গীতে খতিব নিখোঁজের ঘটনায় ইসকন বিরোধী বিক্ষোভে উত্তেজনা

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার রিপোর্ট
প্রকাশিত: ৮:০৯ অপরাহ্ন, ২৪ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ৮:০৯ অপরাহ্ন, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী পূর্ব থানার টিএনটি বাজার জামে মসজিদের খতিব আলহাজ্ব ক্বারী মুফতি মহিবুল্লাহ মিয়াজী নিখোঁজের একদিন পর পঞ্চগড় থেকে উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় টঙ্গীজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) নিষিদ্ধের দাবিতে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর ২০২৫) বাদ জুমা টঙ্গীতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে খতিব মুফতি মহিবুল্লাহ নিজ বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়া থানার হেলিপ্যাড বাজার এলাকায় একটি গাছের সঙ্গে শিকলবদ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ। বর্তমানে তিনি পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

আরও পড়ুন: কাপাসিয়ায় তাওহিদী জনতার উদ্যোগে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ

এ ঘটনার পর থেকেই স্থানীয় মুসল্লি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে টঙ্গী টিএনটি বাজার জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি টঙ্গী বাজার, স্টেশন রোড হয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নেয়।

দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে শুরু হওয়া এ মিছিলে হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করেন। তারা ‘ইসলামের শত্রুরা হুশিয়ার, সাবধান! দুনিয়ার মুসলিম এক হও! বাংলার জমিনে ইসকনের ঠাঁই নাই!’—এমন নানা স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভ চলাকালীন সময় মহাসড়কের ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে যান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে।

আরও পড়ুন: কুলাউড়ায় বিশেষ অভিযানে ১৪ জন গ্রেপ্তার

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক অবস্থান ও স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতায় বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিলটি শেষ হয়। এরপর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।

টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অহিদুজ্জামান বলেন, “মুফতি মহিবুল্লাহ মিয়াজীকে পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া থানার হেলিপ্যাড বাজার এলাকায় একটি গাছের সঙ্গে শিকলবদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তদন্ত চলছে।”

অন্যদিকে, স্থানীয় ধর্মীয় নেতারা সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, “একজন আলেমকে শিকলবদ্ধ করে ফেলে রাখা ইসলাম ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”

এদিকে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঘটনার পেছনে কোনো সংগঠিত নাশকতা বা উসকানিমূলক উদ্দেশ্য আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বর্তমানে পুরো টঙ্গী এলাকায় পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। ধর্মীয় সংবেদনশীলতা বিবেচনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিক সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।