নেত্রকোণায় এনামূল হক পলাশের ‘জনগণের ঐক্য ও সাংস্কৃতিক বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা’র গ্রন্থালোচনা
কবি ও চিন্তক এনামূল হক পলাশের ‘জনগণের ঐক্য ও সাংস্কৃতিক বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা’ বইয়ের গ্রন্থালোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, বুধবার বিকেলে নেত্রকোণার উদীচী ভবনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নেত্রকোণা সংস্কৃতি মঞ্চ।
সংস্কৃতি মঞ্চের সভাপতি কনক পন্ডিতের সভাপতিত্বে গ্রন্থালোচনা অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন, নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আংগুর হোসেন, নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রভাষক ও লেখক ড. মুহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম, জনগণের সংস্কৃতির তাত্ত্বিক ও লেখক আনোয়ার হাসান, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কালচারাল একাডেমির পরিচালক কবি পরাগ রিছিল।
আরও পড়ুন: ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুর পাশে নেই বাবা, একা সংগ্রাম করছেন মা
গ্রন্থালোচনা অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন উদীচী জেলা সংসদের সভাপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ও সংস্কৃতি মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার অলিউল্লা।
অধ্যাপক আংগুর হোসেন বলেন, কবি এনামূল হক পলাশ তার বইয়ে ইতিহাসের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে চেষ্টা করেছেন। বাংলা ভূখণ্ডের প্রতি লেখকের দায়বদ্ধতা থেকে এই বই রচিত হয়েছে। লেখক এখানে জনগণের ঐক্যের দিকনির্দেশনা দিতে চেষ্টা করেছেন।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে ৩০ ফুট গভীর পাইপে আটকা ২ বছরের শিশু, চলছে উদ্ধারের চেষ্টা
লেখক ড. মুহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম বলেন, এনামূল হক পলাশ তার বইয়ের শিরোনামে যেমন স্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন, তেমনি পুরো গ্রন্থজুড়ে জনগণের সাংস্কৃতিক ঐক্য এবং সামাজিক পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে পাঠকের সামনে নতুন আলাপের পথ খুলে দিয়েছেন। কালচারাল হেজিমনি বিষয়ক ভাবনার ভেতর দিয়ে লেখক পশ্চিমা ধ্যানধারণাকে খারিজ করেছেন।
তাত্ত্বিক ও লেখক আনোয়ার হাসান বলেন, আমাদের দেশে বুদ্ধিবৃত্তিক দীনতা আছে। কবি এনামূল হক পলাশ সেই চিন্তায় ডুবে আছেন, সেটা ভাবতে আমার ভালো লাগে। বইটি লেখার জন্য তাকে অভিনন্দন।
কবি পরাগ রিছিল বলেন, কবি এনামূল হক পলাশের এই বইটি সময়ের একটি দলিল হিসেবে চিহ্নিত হবে। এই বইটি বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নতুনভাবে ভাবতে শেখাবে।
এনামূল হক পলাশ তার বক্তব্যে বলেন, "জনগণের সংস্কৃতি ছাড়া আর কোনো সংস্কৃতি গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদেরকে শুরু করতে হবে চর্যাপদ থেকে, এবং শেষ করতে হবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গ্রাফিতির ভাষা দিয়ে। ডিআওএম ফিকেশনের মাধ্যমে আমাদের জাতিসত্তা পুনর্গঠন করতে হবে। এজন্য ইতিহাসের ধারাবাহিকতা আবিষ্কার করে সত্য ইতিহাসকে পুনর্নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।"
গ্রন্থালোচনার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত লেখক ও শ্রোতাদের গান, কবিতা ও নৃত্য প্রদর্শন করে অনুষ্ঠান সমাপ্ত করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লেখক পুরবী সম্মানিত, ছড়াকার সঞ্জয় সরকার, নেত্রকোণা সাহিত্য সমাজের সাধারণ সম্পাদক কবি তানভীর জাহান চৌধুরী, প্রাবন্ধিক পল্লব চক্রবর্তী, কবি কামাল হোসাইন, প্রাবন্ধিক দীপক সরকার, কবি দেলোয়ার হোসেন মাসুদ, উদীচী জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলমগীর, কবি আব্দুল হেলিম সহ অনেকে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আজমেরী ইসলাম এবং বইটির উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি সুলতানা রাজিয়া।
প্রবন্ধের গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে ঘাসফুল। প্রচ্ছদ করেছেন সাহাদাত হোসেন। মূল্য ২৩০ টাকা।





