‘ম্যারেজ সংস্থার’ আড়ালে নারীদের সর্বনাশ, মুফতি কাসেমী গ্রেফতার
শরীয়াহভিত্তিক নিকাহ পরামর্শ প্রতিষ্ঠান ‘আইডিয়াল ম্যারেজ ব্যুরো’র প্রতিষ্ঠাতা মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার (২৩ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে ঢাকার আটিবাজার এলাকার বাসা থেকে তাঁকে আটক করে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন: শীশা বারে হত্যাকাণ্ডের জেরে চাঁদার হার দ্বিগুন করেছেন বনানী থানার ওসি
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল হক গণমাধ্যমকে জানান, কাসেমীর স্ত্রী তামান্না হাতুনের পক্ষে তার মামি আন্না পারভীন বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলার ভিত্তিতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি পুলিশ হেফাজতে আছেন।
সম্প্রতি কাসেমীর বিরুদ্ধে তার ‘তৃতীয় স্ত্রী’ পরিচয়ে ফেসবুকে গুরুতর অভিযোগ প্রকাশ করেন এক নারী। ১৬ অক্টোবর ‘তামান্না হাতুন’ নামে একটি আইডি থেকে দেওয়া সেই পোস্টে তিনি জানান—এক বছর ধরে মৌখিক বিবাহের মাধ্যমে কাসেমীর সঙ্গে সংসার করেছেন, যেখানে ১০ হাজার টাকা কাবিন নির্ধারিত ছিল।
আরও পড়ুন: এসপি হতে ৫০ লাখ টাকা ঘুষের অভিযোগে পুলিশ সুপারকে দণ্ড
অভিযোগকারী নারীর দাবি, আইডিয়াল ম্যারেজ ব্যুরো নারীদের সংসার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে এক মাস বা দুই মাসের জন্য বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক বিয়ের ব্যবস্থা করত। এরপর মেয়েটিকে তালাক দিয়ে দায় এড়ানো হতো। এ নিয়ে আপত্তি জানালে তার সঙ্গে কাসেমীর ঝামেলা তৈরি হয় এবং একপর্যায়ে তাকে মুখে তালাক দেন।
তিনি আরও জানান, তালাকের পরও কাসেমী তাকে ‘সব ঠিক করে দেবে’ বলে অবৈধভাবে সম্পর্ক চালিয়ে যায়। একসময় তিনি গর্ভবতী হলে কাসেমী শিশুটিকে ‘অবৈধ’ উল্লেখ করে গর্ভপাতের চাপ দেয়। অভিযোগ অনুযায়ী, কাসেমী ও তার আত্মীয়রা জোর করে ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত ঘটায়।
গর্ভপাতের তিনদিন পর কাসেমী কুষ্টিয়ায় গিয়ে ১৩ বছরের এক শিশুকে বিয়ে করেন বলেও তার দাবি। এ ঘটনার পর তিনি ১৪ অক্টোবর থানায় মামলা দায়ের করেন।
ফেসবুক পোস্টে ওই নারী বলেন, “একসময় মনে হতো আমি সবচেয়ে ভালো একটি কাজের সঙ্গে যুক্ত আছি। এখন বুঝতে পারছি, আমি সবচেয়ে নিকৃষ্ট প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। আমি যদি চুপ থাকি, আরও নারীরা এদের প্রতারণার শিকার হবে।”
এ বিষয়ে পুলিশের আরও তদন্ত চলছে।





