টিএসসি কেন্দ্রের সিকিউরিটি ইনচার্জ শিক্ষক মোনামির দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:০১ অপরাহ্ন, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৪:১৫ পূর্বাহ্ন, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে টিএসসি কেন্দ্রের সিকিউরিটি ইনচার্জের দায়িত্ব পালনরত ঢাবির সহকারী প্রক্টর ও শিক্ষক শেহরীন আমিন মোনামি দায়িত্ব পালনকালে তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ফেসবুকে বাংলা ও ইংরেজি মিশিয়ে এ স্ট্যাটাস দেন মোনামি।  

আরও পড়ুন: নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে যা বললেন ছাত্রদল প্রার্থী আবিদুল ইসলাম

স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, আমি গত আগস্টে সহকারী প্রক্টর হিসেবে যোগ দিই। একটাই কারণ ছিল, জুলাইকে আমি ভীষণ আপন মনে করি এবং আমার আলমা মেটারের (প্রিয় শিক্ষাঙ্গন) জন্য কিছু ভালো কাজ বা অবদান রাখতে পারি, তা হয়তো এই ভূমিকার মাধ্যমেই সম্ভব। আমি শুধু একটাই চেয়েছি, একজন শিক্ষক হতে! আমার কোনো প্রশাসনিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই, নেই কোনো রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাও। কিন্তু আজ আমি এখানে, অভিযোগে অভিযুক্ত, হয়রানির শিকার (নিজ ক্যাম্পাসে এবং অনলাইনেও)।

তিনি আরও লেখেন, আমার শিক্ষার্থীদের কাছে, যারা এতদিন আমাকে একাডেমিক কিংবা প্রক্টরিয়াল ভূমিকায় দেখেছ, তাদের কাছে আমার শুধু একটি প্রশ্ন—আমি কি কখনো পক্ষপাতদুষ্ট ছিলাম? আমি কি কখনো তোমাদের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চেয়েছি? আমি কি সর্বোচ্চ চেষ্টা করিনি তোমাদের সাহায্য করার? আমার ক্ষমতা ও এখতিয়ারের মধ্যে যতটুকু সম্ভব, আমি কি তা করিনি? তাহলে আজ কেন এসব অভিযোগ?

আরও পড়ুন: পাঁচ হলে ডাকসু নির্বাচনের ফল, শিবির সমর্থিত প্যানেল এগিয়ে

মোনামি লিখেছেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো আমাকে কষ্ট দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু আমি জানি আমি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ছিলাম। প্রথমত, আমি নিরাপত্তা–ইনচার্জ ছিলাম। তাই ভুল অপবাদ দেওয়ার আগে তা জানা উচিত। দ্বিতীয়ত, নির্বাচন আচরণবিধি কেন প্রার্থীরা বারবার লঙ্ঘন করছিল? তোমরা কি তা জানোনি? আমি আমার নির্দেশনায় কঠোর ছিলাম এবং এতে কোনো অনুশোচনা নেই। আমি সঠিক কাজটাই করেছি, আমি দায়িত্বে ছিলাম।

নিজের দায়িত্ব পালনের কথাও তুলে ধরেন তিনি। লিখেছেন, আসল কষ্টটা কোথায় বলি। যে দিন থেকে আমি যোগ দিয়েছি, আমাকে ২১ ফেব্রুয়ারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, আমি তা সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। আমাকে পহেলা বৈশাখের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, আমি পরিস্থিতি দক্ষতার সঙ্গে সামলে তা শেষ করেছি। আমাকে এককভাবে ১৪ জুলাইয়ের সারারাতের কনসার্ট আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, আমি আমার টিম নিয়ে তা সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। আমাকে ৫ আগস্টের অনুষ্ঠানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, আমি সফলভাবে তা সম্পন্ন করেছি।

তিনি আরও যোগ করেন, কিন্তু আজ আমাকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হলো। আমার নিজের সহকর্মীকে নীচু মানসিকতার অভিযোগ ও অশোভন আচরণের মুখোমুখি হতে হলো, শুধুমাত্র কারণ তিনি আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আমাকে এক ঘণ্টা আগেই প্রক্টর অফিসে ফিরে আসতে হলো, কারণ আমি ঝুঁকিতে ছিলাম। আর আমার উপস্থিতি পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারত। আমার দায়িত্ব অসমাপ্ত থেকে গেল।

স্ট্যাটাসের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আমি এই কষ্ট কোনোদিন ভুলব না। আমি ছাত্রলীগকে ভয় করিনি। আমি কাউকেই ভয় করি না, কারণ সত্য আমার পক্ষে। তবু আমি চুপচাপ ফিরে এসেছি, কারণ আমি চাইনি আমার কারণে নির্বাচন ব্যাহত হোক।