তিন দাবিতে অনশনে জবি শিক্ষার্থীরা

সম্পূরক বৃত্তি ও ছাত্র সংসদ নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা সহ তিন দফা দাবিতে অনশন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে দুপুর দুইটা থেকে শুরু হওয়া এই অনশন বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (বিকাল ৪টা) অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুন: জুলাই পরবর্তী ছাত্ররাজনীতির মডেল ছাত্রশিবির : সাদিক কায়েম
অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন—উদ্ভিদবিজ্ঞানের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এ কে এম রাকিব, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল মুরাদ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস শেখ, ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শাহীন মিয়া এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অপু মুন্সি।
অনশনকারীদের মধ্যে ফয়সাল মুরাদ ও এ কে এম রাকিব ইতোমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের পেটে ব্যথা, রক্তচাপ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে স্নাতক ভর্তি আবেদন শুরু ২৯ অক্টোবর থেকে
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবিগুলো—
১. শিক্ষার্থীদের সম্পূরক বৃত্তি কবে থেকে কার্যকর হবে তা স্পষ্ট করতে হবে।
২. বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করতে হবে।
৩. ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান করে স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন। এসময় তাদের অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। তারা ব্যর্থতার দায়ে উপাচার্য সহ পুরো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদত্যাগের দাবি তোলেন।
এ-সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা 'দফা এক দাবি এক, ভিসির পদত্যাগ', 'গদি দরে মারো টান, ভিসি হবে খানখান', 'জ্বালো রো জ্বালো, আগুন জ্বালো', 'ব্যর্থ ভিসির গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে', 'প্রশাসনের তাল-বাহানা, মানি না মানি না', 'এক দুই তিন চার, ভিসি তুই গদি ছাড়', 'প্রশাসনের কালো হাত, ভেঙ্গে দাও গুঁড়িয়ে দাও', 'বৃত্তি জকসু বুঝায় দে, নইলে গদি ছাইড়ে দে', সহ বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, এ প্রশাসন চরমভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এদের আর এক মুহূর্ত আমরা এখানে দেখতে চাই না। আমরা গেট লক করে ভিসি এনেছি আমাদের অধিকারের আদায়ের জন্য, কোনো তাল-বাহানার জন্য নয়। এ ভিসি সহ পুরো প্রশাসনের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
অনশনরত শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, “আমরা অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশনে যেতে বাধ্য হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। এই নখদন্তহীন প্রশাসন হয়তো আমাদের দাবি মেনে নেবে, নয়তো তাদের নিজেদের রাস্তা মাপতে হবে।”
আরেক অনশনকারী ফয়সাল মুরাদ বলেন, “প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চলছে, কিন্তু প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইতিমধ্যে তিনিসহ দুজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।”